এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। যার জন্য সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন পুণ্যার্থীরা। অবগাহন করলেন সাগরে। ভোর থেকেই চলল স্নান-পুজো অর্চনা। শর্তসাপেক্ষে গঙ্গাসাগর মেলার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট । করোনা বিধি মানার জন্য় তৎপর প্রশাসনও। কিন্তু মেলা প্রাঙ্গণে সেই নির্দেশ মানার ছবি তেমন ভাবে দেখতে পাওয়া গেল না। তবে প্রশাসনের তরফে কোনও বিষয়ে খামতি নেই। ড্রোন উড়িয়ে চলে বিশেষ নজরদারি।
এই মেলা করোনার সুপার স্প্রেডার হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা আগেই করেছিলেন বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকমহল। পুণ্যার্থীদের সতর্ক করতে প্রচার করা হচ্ছে মাইকে। কিন্তু, তারপরও নিষেধাজ্ঞাকে কার্যত উড়িয়ে দিয়ে স্নান সারলেন কয়েক হাজার মানুষ।
ভোর থেকেই ভিড় বাড়তে থাকে সাগরে। বিভিন্ন ঘাটে পুণ্য় স্নান সারেন পুণ্য়ার্থীরা। সমুদ্র সৈকতে পুলিস প্রশাসনের নজরদারি থাকলেও পুণ্যার্থীদের স্নানে বাধা দিতে দেখা যায়নি তেমন কাউকেই। এমনকী, ঠেসাঠেসি করে করে পুজো দিলেন কপিল মুনির মন্দিরেও। মাস্কহীন বহু মানুষ পুজো দিলেন কপিলমুনির আশ্রমে।
প্রচলিত প্রবাদ আছে সব তীর্থ বারবার গঙ্গাসাগর একবার ৷ প্রবাদেই লুকিয়ে রয়েছে সাগর সঙ্গমে পুণ্য স্নানের মাহাত্ম্য৷ পৌরাণিক গল্প বলে, অযোধ্যার ঈক্ষাকু বংশের রাজা সগরের অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘোড়া চুরি করেন দেবরাজ ইন্দ্র। তিনি ঘোড়াগুলি গঙ্গাসাগরে কপিল মুনি আশ্রমের পিছনে লুকিয়ে রেখেছিলেন। সেই ঘোড়া খুঁজতে গিয়েই কপিল মুনির রোষে পড়ে ভস্মীভূত হয়েছিলেন সগর রাজের ষাট হাজার জন ছেলে। বিশ্বাস করা হয়, তাঁদের উদ্ধার করতেই সগরের নাতি ভগীরথ কপিল মুনির নির্দেশ মতো স্বর্গ থেকে গঙ্গাকে মর্ত্যে নিয়ে আসেন।গঙ্গা শিবের জটা থেকে বেরিয়ে পৃথিবীতে প্রবাহিত হয়ে কপিল মুনির আশ্রমে পৌঁছেছিল। মিলেছিল সাগরে। সেই দিন ছিল মকর সংক্রান্তি। তাই মকর সংক্রান্তিতে গঙ্গা এবং সাগরের সঙ্গমে স্নান করলে পুণ্য় অর্জন হয়, এমনই মনে করেন সাধারণ মানুষ ৷ স্নান এবং দান এই উত্সবের প্রধান কর্তব্য৷। যিনি গঙ্গাসাগরে যেতে পারবেন না তিনি যেকোনও জলাশয়ে সাগরকে স্মরণ করে স্নান করবেন৷ এমনটাও বলে থাকেন শাস্ত্রজ্ঞরা।
এতো গেল পুরাণের কথা। সূত্রের খবর, ইতিমধ্য়েই গঙ্গাসাগর মেলা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছে হাইকোর্ট নিযুক্ত কমিটি।