সুন্দরবনে ফের কাঁকড়া ধরতে গিয়ে প্রাণ গেল এক মৎস্যজীবীর। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় রবিবার সকালে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের বসিরহাট রেঞ্জ অফিসের ঝিলার জঙ্গলে। স্থানীয় মৎস্যজীবী ও বন দপ্তরের কর্মীদের চেষ্টায় দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত মৎস্যজীবীর নাম অরবিন্দ বিশ্বাস। বয়স ৪৫। কুমিরমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের মিশনপাড়ায় বাড়ি। পেটের টানে সুন্দরবনের জঙ্গলে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হামলার মুখে পড়েন তিনি।
রবিবার ভোর থাকতেই নৌকা চেপে মরিচঝাঁপি ঝিলার তিন নম্বর জঙ্গলে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন কুমিরমারির বাসিন্দা অরবিন্দ বিশ্বাস। সঙ্গী ছিলেন আরও দুজন। সেখানে নৌকা থেকে নামতেই অরবিন্দের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘ। টেনে নিয়ে যায় গভীর জঙ্গলে। কোনওরকমে প্রাণ বাঁচিয়ে ফিরে আসেন সঙ্গী দুজন। বাঘের মুখ থেকে দেহ ছিনিয়ে আনার সাহস হয়নি তাঁদের। তবে ফিরে এসেই নিকটবর্তী রেঞ্জ অফিসে খবর দেন তাঁরা। রেঞ্জ অফিসের আধিকারিকরা ছুটে যান ঘটনাস্থলে। তল্লাশি চালিয়ে জঙ্গলের ভিতর থেকে দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পেটের দায়ে বড় দায়। পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দিতে তাই ছুটতে হয় কাঁকড়া ধরতে। আর এই কাজ করতে গিয়ে বাঘের হামলায় প্রাণ গিয়েছে বহু মৎস্যজীবীর। এবার সেই তালিকায় জুড়ে গেল কুমিরমারি গ্রামের মৎস্যজীবী অরবিন্দ বিশ্বাসের নামও।
এই ধরনের ঘটনার শেষ কোথায়, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। কারণ, এটা শুধু সামাজিক সমস্যা, এমন নয়। এটা পুরোপুরি আর্থ-সামাজিক সঙ্কটেরই করুণ পরিণতি বলে চলে। তাই সুন্দরবনের অসহায় মানুষগুলোর যতদিন না অন্নের সংস্থান হচ্ছে, ততদিন এই ধরনের ঘটনাতেও রাশ টানা সম্ভব নয়। ফলে সরকারি স্তরে এঁদের জন্য চিন্তাভাবনা করার সময় এসেছে। না হলে এভাবেই অকালে ঝরে যাবে একের পর এক প্রাণ।