'বেআইনি মাদকচক্র' শব্দ দুটি যেন এখন লোকের মুখে মুখে ফেরে। বারবার সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে একাধিক মাদকচক্রীর নাম। এবার সিএন-এর অন্তর্তদন্তে মেদিনীপুর শহরের দুই প্রান্ত থেকে উঠে এল চাঞ্চল্যকর কিছু ছবি। দেখা গেল, পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে রমরমিয়ে চলছে মাদক কারবারিদের সাম্রাজ্য।
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেরেকেটে পাঁচশো মিটার দূরত্বে রয়েছে এক সাইকেল গ্যারাজ। গ্যারাজের আড়ালে রমরমিয়ে চলে গাঁজা-মাদকের কারবার। একইভাবে শহরের কুইকোটা এলাকায় একটি বসতবাড়ি থেকে করা হচ্ছে মাদকদ্রব্যের ব্যবসা। খবর পেয়ে সোমবার মাদক কারবারিদের দুটি ডেরাতেই হানা দেন সিএন-এর সাংবাদিক। কীভাবে চলছে মাদক কারবার! তার পুরো ছবি ক্যামেরাবন্দি করেন। এই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই তৎপর হয় কোতোয়ালি থানার পুলিশ। আটক করা হয় ওই দুই মাদক বিক্রেতাকে।
প্রসঙ্গত, একাধিক সময় দেখা গিয়েছে, পড়শি রাজ্য ওড়িশা থেকে দাঁতন বর্ডার হয়ে রাজ্যে প্রবেশ করেছে গাঁজা, ড্রাগস, ব্রাউন সুগারের মতো মাদকদ্রব্য। মাদক পাচার আটকাতে জেলা পুলিশের তরফে দাঁতন সীমান্ত এলাকায় বসানো হয়েছে নাকা পয়েন্টও। সম্প্রতি দাঁতন এবং ডেবরার নাকা পয়েন্টে একাধিক গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ গাঁজাও। তবে পুলিশের এত কড়াকড়ির পরেও শহরের বুকে অবাধে যে মাদক কারবারিরা নিজেদের সাম্রাজ্য চালিয়ে যাচ্ছে, সোমবারের ছবি দেখলেই তা পরিষ্কার।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন জেলা বিজেপি নেতা শঙ্কর গুছাইত। তাঁর দাবি, অবিলম্বে মাদক পাচারকারীদের রুখতে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে পুলিশকে। একই দাবি জানিয়েছে শাসকশিবিরও।
মেদিনীপুর শহরের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বিশ্বনাথ পাণ্ডবের দাবি, অবিলম্বে মাদকচক্র বন্ধ করতে তৎপর হতে হবে পুলিশকে। এমন ছবি প্রকাশ্যে আসার পর উদ্বেগ প্রকাশ করছেন সমাজকর্মীরাও। একদিকে যেমন পুলিশি অভিযান চালাতে হবে, ঠিক তেমনই সচেতন করতে হবে সাধারণ মানুষকে, দাবি মেদিনীপুরের সমাজকর্মী নিসর্গ নির্যাস মাহাতোর।
তবে শহরের বুকে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে কীভাবে চলছে মাদক পাচারচক্র? সর্ষের মধ্যেই ভূত লুকিয়ে নেই তো? প্রশ্ন তুলছে জেলার বিভিন্ন মহলের মানুষ।