জেলা সফরে দুর্গাপুর সৃজনী অডিটরিয়ামে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। পূর্ব এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলাকে নিয়েই এই প্রশাসনিক বৈঠক। বুধবার বৈঠকের শুরুতে সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে নেগেটিভ পাবলিসিটির অভিযোগ তোলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। সম্প্রতি তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বহুতল নিয়ে সংবাদ পরিবেশনা হয়েছে। সেই প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'আমি একজনকে জানি পূর্ব বর্ধমানের ঝর্না রায়কে। মাটির ঘরে থাকেন। পরিচারিকার কাজ করেন। স্বামীর কিডনি রোগ। এসব তো লেখেন না।' এভাবেই নেতিবাচক খবর পরিবেশনার বিরুদ্ধে সরব হয়ে মিডিয়ার উদ্দেশে বললেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন আর কী কী বললেন তিনি?
১) স্থানীয় টেন্ডার নয়, বালির লরির জন্য ই-টেন্ডার করে দেওয়া ভালো। সরকারি ট্রেজারিতে অর্থ যাবে।
লাভ হবে সরকারের
২) আমদপুর গ্রামের নিরঞ্জন ঘোষ কোল্ড স্টোরেজে আলু রেখেছিলেন। সব আলু নষ্ট হয়ে গিয়েছে, টাকা পায়নি
৩) হাইকোর্টে কেস হয়েছে শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি সাত দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান চাই
৪) ঠিকা শ্রমিকরা টাকা পাচ্ছে না অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন সমস্ত ঠিকা শ্রমিকের পে স্লিপ চালু করা হবে
৫) ১ টা কেসে সিবিআই এক হাজার জনকে ডেকেছে। তৃণমূল নেতা থেকে সাংবাদিক সবাই আছে। হযবরল করে দিয়েছে
৬) বাংলার বাড়ি নিয়ে লিস্ট তৈরি করবেন না। কেন্দ্রীয় সরকার যতদিন টাকা না দিচ্ছে করার দরকার নেই
৭) গ্রামীণ রাস্তার টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য কাজ আমরা দেখে নেব। এখন শুধু গ্রামীণ রাস্তা তৈরি করুন
৮) পঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে। সারা বাংলার জন্য পলিসি তৈরি করা হল। গ্রামীণ রাস্তা খারাপ থাকলে কেউ ভোট দেবে না
৯) রাস্তা দেখে খুশি হয়ে ভোট দেবে। দরকার হলে মাথায় করে ইট বইবেন। আমাকে ডাকবেন আমি বইব। আমি আগেও মাথায় ইট বয়ে রাস্তা করেছি
এদিন এই নির্দেশগুলো পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের দিলেন মমতা। তিনি জানান, নতুন করে বাংলার বড়ির জন্য নাম নথিভুক্ত করবেন না। কেন্দ্রীয় সরকার টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। প্রতিবছর ৮০০ কোটি টাকা রাস্তার জন্য দেওয়া হতো। পঞ্চায়েতের টাকা দিয়ে রাস্তা করুন। আর রাস্তার টাকা দিয়ে বাড়ি করব। পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ রাস্তা করবে নিজেদের তহবিল থেকে। এভাবে উপায় বাতলে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'রাস্তার জন্য রাজ্য সরকার যে ৪০ শতাংশ টাকা দেয়, তা দিয়ে বাংলার বাড়ি বানাবে সরকার। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কথা জানাতে হবে সাধারণ মানুষকে। ১৬৮২টি বিএসকে সেন্টারে আধার কার্ড-সহ অন্য কাজ করবে। আরও ১৪৬১টি বিএসকে সেন্টার তৈরি হবে।'
বিডিওদের প্রতি তাঁর বার্তা,'বিডিওরা ঠিক মতো অফিসে যান না, এমন অভিযোগ আসছে। পুলিশকে বলব সার্ভে করতে। না থাকলে জেলা শাসককে রিপোর্ট করুন। উত্তরবঙ্গের বিডিওদের বিকেল ৫.৩০ পর্যন্ত থাকতে হবে।'
এদিনের প্রশাসনিক সভায় জনসংযোগ বাড়ানোর জন্য জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এক বিধায়কের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, 'ধান কাটতে পারেন? আমি ধান কাটতে পারি। ধান বুনতে পারি। মামার বাড়ি গিয়ে ধান কাটা শিখেছি। ধান দিয়ে জিনিস কিনতাম। আগে ধানের বদলে জিনিস পাওয়া যেত।' পাশাপাশি এদিন তিনি ১৯০ কোটি টাকা খরচ করে বিদ্যাধরি সেতুর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করলেন। শিলিগুড়ি এবং জিটিএ ভোটের ফল প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'পাহাড়ের মানুষকে অভিনন্দন। পাহাড়ে ভোট শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। ৮টা আসন বিরোধীরা পেয়েছে। বাকি আমাদের জোট পেয়েছে। শিলিগুড়ি মহাকুমা পরিষদকেও ধন্যবাদ।