প্রসূন গুপ্ত: অঙ্কিতা অধিকারী, এই মুহূর্তে এসএসসি কেলেঙ্কারিতে এক উজ্জ্বল নাম। ক্ষমতাবান মন্ত্রী পিতার কল্যাণে তাঁর নামটি উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের খাতায়| উচ্চ আদালত জানিয়েছেন, তাঁকে সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে। সেই মোতাবেক তাঁর চাকরি বরখাস্ত সংক্রান্ত পদ্ধতি চালু হয়ে গিয়েছে। এভাবে সম্পূর্ণ অনিশ্চতায় চলে গিয়েছে অঙ্কিতার পেশাগত জীবন। হাইকোর্ট থেকে সংবাদমাধ্যম, অঙ্কিতাকে তুলোধোনা করা হচ্ছে নিয়মিত।
আসলে যতই ভালো ছাত্র বা ছাত্রী কেউ হোক না কেন এবং সরকারি চাকরিতে সে আবেদন দিক না কেন, গত ৪০ বছরে একটি বিষয় পরিষ্কার চাকুরীপ্রার্থীদের কাছে যে 'সোর্স' না থাকলে চাকরি পাওয়া দুরূহ বিষয়। কেন এমনটি হল বা বাস্তব ক্ষেত্রে এটি কতটা সত্যি তার দায় গত ৩৪ বছরের বাম সরকার অস্বীকার করতে পারবে কি? বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা যেত বাম বিশেষ করে সিপিএমের হোলটাইমারদের কোনও কর্মসংস্থান ছিল না, বা তাঁরা চাকরি করতেন না, বরং পার্টির কাজে নিজেদের মগ্ন রাখতেন তারা। একই সাথে দেখা গিয়েছিলো, তাঁদের পরিবারে কেউ না কেউ সরকারি চাকরি করছে, যার রোজগারে সংসার চলে। এই বক্তব্য আমাদের নয়, বরং বাম-বিরোধীদের। কীভাবে এই চাকরি হতো কেউ কখনও খতিয়ে দেখেনি, বা চ্যালেঞ্জ করার হিম্মত ছিল না কারও। এই সরকারি সুবিধাকেই ৯০ দশক থেকে 'অনিলায়ান" বলা হতো।
অর্থাৎ প্রয়াত সিপিম রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাস নাকি এই প্রক্রিয়া চালু করেছিলেন। আজকের স্কুল কলেজে বা সরকারি যে কোনও অফিসে এখনও ৮০ শতাংশেরও বেশি বাম সমর্থিত কর্মীরাই চাকরি করছেন।
অঙ্কিতা স্কুল কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো রেজাল্ট করা ছাত্রী ছিল। যদি বাবার সাহায্য না নিয়ে চাকরির চেষ্টা করতো হয়তো নিজের যোগ্যতাই চাকরি পেয়ে যেতেন কিন্তু ওই অনিলায়ন প্রক্রিয়া যে রং বদলে ফেলেছে।
এবারে কলেজে সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার ফলাফলে ফের চাকরিতে তাঁর নাম উঠেছে। দেখা গিয়েছে সে পরীক্ষা দিয়েছিলো এবং সঠিক ভাবে নির্বাচিত হয়েছে। তাঁর ক্রমিক সংখ্যা ২০১০৩৩১০। কিন্তু এবারও প্রশ্ন উঠেছে, সিএসসি থেকে জানানো হচ্ছে কোনও বিশেষ প্রক্রিয়ায় তাঁর চাকরি হয়নি বরং সঠিক পদ্ধতিতেই নাম এসেছে। বাকি প্রশাসন দেখুক।