একদিকে মানুষ যখন শীতের আমেজ গায়ে মেখে এই সময়টা একটু উপভোগ করার আশায় দিন গুনছেন, ঠিক সেই সময়ই রাজ্যেরই একাংশে দুর্যোগের ঘনঘটা। বঙ্গোপসাগরে গভীর ঘূর্ণাবর্তের জেরে বৃষ্টির সম্ভাবনা। দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান, বীরভূম, ঝাড়গ্রাম, নদিয়া জেলায় হলুদ সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। ফলে বৃষ্টির জেরে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকরা। কীভাবে মাঠভরা ফসল অক্ষত অবস্থায় ঘরে তুলবেন, সেটাই তাঁদের মূল চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঘূর্ণাবর্তের জেরে সোমবার সকাল থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে পঃ মেদিনীপুরের ঘাটাল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায়। ঘাটাল মহকুমার চন্দ্রকোনা আলু চাষের গড় হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন এলাকায় জমি থেকে ধান তুলে শুরু হয়েছিল আলু লাগানোর কাজ। এবছর অতিবৃষ্টির কারণে এখনও জমিতেই পড়ে রয়েছে পাকা ধান। কোথাও কোথাও ধান তুলে আলু লাগানোর কাজ শুরু হয়েছিল। তারই মাঝে আবার ভারী বৃষ্টিতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চন্দ্রকোনার আলু চাষিরা। তাঁরা জানান, অতিবৃষ্টির কারণে আলু জমির মাটি তৈরি করতে বেশ কিছুটা দেরি হয়ে যাবে। ফলে নষ্ট হতে পারে আলুর বীজ। কার্যত চরম ক্ষতির মুখে চাষিরা। ঋণ নিয়ে চাষ করে ধার শোধের চিন্তায় কৃষকরা। একদিকে অতিমারী পরিস্থিতি, তার উপর পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে জেরবার সাধারণ মানুষ। এবার অসময়ের বৃষ্টি ফের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলল চাষিদের।
গত তিনদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি চলছে পূর্ব বর্ধমানের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। ফলে ধানের ক্ষতির আশঙ্কায় চাষিরা। আমন ধান পেকে যাওয়ার এই সময়ে চাষিদের মাথায় হাত। কাটোয়ার কৃষকরা জানান, কিষাণ ক্রেডিট কার্ড মিললেও মেলেনি টাকা। বিডিওকে জানিয়েও সুরাহা হয়নি বলে জানান তাঁরা। বৃষ্টির ফলে সব ধান নষ্ট হয়েছে। কষ্টের উৎপাদিত ফসলের এমন ক্ষতিতে দিশাহারা কৃষকরা। কবে দুর্যোগ কেটে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, সেদিকেই তাকিয়ে কাটোয়ার চাষিরা।