দার্জিলিং পাহাড়ে নতুন রাজনৈতিক দলের উদ্ভব। যা বদলে দিল পাহাড়ের রাজনীতির সমীকরণ। মাত্র ছ'মাস আগে গঠিত হওয়া হামরো পার্টি দখল করল দার্জিলিং পুরসভা৷ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, জিএনএলএফ, তৃণমূলের মতো প্রধান দলগুলিকে পিছনে ফেলে দার্জিলিং পুরসভা দখল করে নিল অজয় এডওয়ার্ডের দল। বিজেপি এই পুরসভায় একটিও আসন পায়নি।
দার্জিলিং পুরসভা কেন্দ্রের ৩২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টিতেই জয়ী হয় হামরো পার্টি। ৪টি জিতেছে বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা৷ অনীত থাপার দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতন্ত্রিক মোর্চা দখল করেছে ৮টি আসন৷ ২টি আসনে জয়ী তৃণমূল কংগ্রেস৷ বিজেপি- জিএনএলএফ জোট কোনও আসনই জিততে পারেনি৷ তবে হামরো পার্টির প্রতিষ্ঠাতা রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী অজয় এডওয়ার্ড নিজে হেরে গেছেন। ২২ নম্বর ওয়ার্ডে থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, অজয় এডওয়ার্ডস শহরে প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবেই পরিচিত। এক সময় গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্টের দার্জিলিং শাখার সভাপতিও ছিলেন। সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই টিকিট পাওয়া নিয়ে দলের সঙ্গে বিবাদ শুরু হয় অজয়ের। দলে তিনি গুরুত্ব পাচ্ছেন না বলে ক্ষোভও প্রকাশ করেন তিনি। তারপরই নতুন দল গঠনের ভাবনা আসে তাঁর মাথায়। একইসঙ্গে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার একটা বিক্ষুব্ধ অংশ এবারের পুরভোটে হামরো পার্টির হয়ে লড়াইয়ের ময়দানে তাঁর পাশে থাকে।
এরপর গত বছর ২৫ নভেম্বর আত্মপ্রকাশ করে হামরো পার্টি৷ সেই সময় তিনি জানান, পাহাড়বাসীকে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে সব দল। প্রকৃত অর্থে কেউই পাহাড়ের বাসিন্দাদের ভালো চান না। তাই তিনি পাহাড়বাসীদের পাশে। সেই কারণেই এবার পাহাড়ে হামরো পার্টির হাত ধরে বড় জয় এসেছে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একটা বড় অংশের।
তবে প্রথমবার ভোটের ময়দানে নেমেই যে হামরো পার্টি পুরসভার দখল নেবে, তা ভাবনার অতীত ছিল রাজনৈতিক মহলে। আর এই ফলে পাহাড়ের রাজনীতি কোন পথে আবর্তিত হয়, তার অপেক্ষায় পাহাড়বাসী।
তবে প্রথম জয় পেতেই খুশির জোয়ারে ভাসলেন হামরো পার্টির কর্মী-সমর্থকরা।