রাজ্যে পালাবদল হয়েছে। তৃতীয়বার ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, জঙ্গলমহল (Junglemahal) হাসছে। অশান্তির বাতাবরণ আর নেই জঙ্গলমহলে। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে জঙ্গলমহলে তেমন মাও উপস্থিতির (Mao Presence) আঁচ চোখে না পড়লেও ফের গোপনে শুরু হয়েছে সন্ত্রাসের জাল বিছানোর কার্যকলাপ৷ সূত্রের খবর, রাজ্যের গোয়েন্দা দফতর (Intelligence) থেকে এমনই সতর্কবার্তা মিলেছে। বেশ কিছুদিন ধরেই জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় দেখা মিলছে মাও পোস্টার (Mao poster)। সেখানে মূলত শাসকদলে নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছে তারা।
ফলে জঙ্গলমহলের মানুষের চোখেমুখে ফের সেই পুরনো আতঙ্ক ফিরে আসছে। জঙ্গলমহলে মাও নাশকতা এড়াতেই আগামী পনেরো দিনের জন্য হাই অ্যালার্ট জারি করল প্রশাসন। হাই অ্যালার্ট জারি হয়েছে জঙ্গলমহলের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে। বিভিন্ন জায়গায় চলছে পুলিসের নাকা চেকিং। কড়া নজরদারির জন্য ভীমপুর এলাকায় বসানো হয়েছে সিসিটিভি। ঝাড়গ্রাম থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরমুখী গাড়িগুলির চেকিং করা হচ্ছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, মূলত জঙ্গলমহলের থানা ও খাঁকি উর্দিধারীদের ক্যাম্পকেই নিশানা করেছে মাওবাদীরা।
তবে জঙ্গলমহলে উন্নয়নের নিরিখে মানুষজন ভালো আছেন বলে দাবি করে শাসকদল। একের পর এক ভোটে নিজেদের ভরাডুবিতে কার্যত মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বিজেপি, এমনই দাবি তৃণমূল নেতৃত্বের।
অন্যদিকে পালটা আক্রমণ শানায় বিজেপিও। মাও দমনে কেন্দ্র টাকা দেয়। রাজ্য সরকারের হাতে টাকা নেই। তাই টাকা আদায়ের জন্য পরিকল্পনা করে এসব করা হচ্ছে বলে দাবি বিজেপির।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস ধরেই ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় মাওবাদীদের উপস্থিতি টের পাওয়া গিয়েছে। উদ্ধার হয়েছে লাল কালিতে লেখা মাও পোস্টার। সরকারি চাকরিতে নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ৮ই এপ্রিল বাংলা বনধও ডেকেছিল মাওবাদীরা। এরপর থেকেই সতর্ক হয় পুলিস প্রশাসন।
বোমাগুলির আওয়াজ, বারুদের গন্ধ, ভারী বুটের আওয়াজের সঙ্গে একাধিক হত্যাকাণ্ড৷ একটা সময়ে মাও কার্যকলাপে অবরুদ্ধ হয়ে উঠেছিল জঙ্গলমহল৷ মুখ্যমন্ত্রীর দাবি অনুযায়ী পালাবদলের পর ধীরে ধীরে অশান্ত জঙ্গলমহলে ফিরেছে শান্তি। তবে সম্প্রতি গোয়েন্দা দফতরের তরফে জঙ্গলমহলের চার জেলায় মাওবাদী আশঙ্কার কথা প্রকাশ করা হয়েছে৷ এরপরই এই চার জেলার জঙ্গলমহলে জারি হয়েছে রেড অ্যালার্ট৷ তবে কি ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে মাওবাদীরা? উঠছে প্রশ্ন।