Share this link via
Or copy link
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দির অস্বাভাবিক মৃত্যু (death) ঘিরে চাঞ্চল্য। প্রশ্নের মুখে জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের ভূমিকা। ঘটনার সঠিক তদন্ত চেয়ে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় (police station) অভিযোগ দায়ের মৃত যুবকের পরিবারের।
জানা যায়, মৃত যুবকের নাম রবিউল হুসেন, বয়স ২০ বছর। বাড়ি কোচবিহার (Cooch Behar) জেলার মেখলিগঞ্জ ব্লকের কুচলিবাড়িতে। একটি পক্সো মামলায় অভিযুক্ত হয়ে ২০২১ সালের অগাস্ট মাস থেকে মেখলিগঞ্জ উপ-সংশোধনাগারে ছিল সে। পরবর্তীতে দোষী সাব্যস্ত হয় এবং তার যাবজ্জীবন সাজা হয়। এরপর গত ডিসেম্বর মাসে তাকে জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে পাঠানো হয়। সেখানেই সাজা কাটছিল সে। পাশাপাশি নিন্ম আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে অ্যাপিল জানিয়ে তার পরিবার হাইকোর্টে মামলা করেছিল, যা বিচারাধীন।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তারামাঝেমধ্যেই কখনও সংশোধনাগারে এসে, আবার কখনও ভিডিও কনফারেন্স ব্যবস্থার মাধ্যমে রবিউলের সঙ্গে কথা বলতেন।
মঙ্গলবারও সেইরকম ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলার জন্য সংশোধনাগারে আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের তরফে সাড়া না পাওয়ায় তাঁদের সন্দেহ হয়। এরপর সংশোধনাগারে ফোন করে রবিউলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে জানানো হয়, সে গুরুতর অসুস্থ হয়ে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই খবর জানার পর মঙ্গলবার বিকেলে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে ছুটে আসে। আসার পর তাঁরা জানতে পারেন, রবিউলের সকালেই মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর শোকাহত পরিবার। এরপর পরিবারের কয়েকজন সংশোধনাগারে যায় মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে। কিন্তু সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ তাঁদের কোনও সদুত্তর দেয়নি বলে অভিযোগ। এরপর মঙ্গলবার রাতে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করে পরিবার।
পরিবারের প্রশ্ন, হাসপাতালে এসে তাঁরা জানতে পারে ১৪ ই আগস্ট রবিউলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই কথা কেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ পরিবারকে জানালো না? মঙ্গলবার মৃত্যুর পরও কেন পরিবারকে জানানো হল না? কীভাবে রবিউল অসুস্থ হল, তাও সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ জানায়নি বলে অভিযোগ।
পরিবারের দাবি, তাঁরা হাসপাতাল সূত্রে জানাতে পেরেছেন, অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ খাওয়াতেই রবিউলের মৃত্যু হয়েছে। এত ঘুমের ওষুধ সংশোধনাগারের ভেতরে এত ঘুমের ওষুধ রবিউল পেলই বা কীভাবে? নাকি সংশোধনাগারের ভেতরে অত্যাচারের ফলে তার মৃত্যু হয়েছে? এরকম একাধিক প্রশ্ন তুলে এবং ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়ে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে মৃত বন্দীর পরিবার।
সংশোধনাগারের তরফে এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। তবে কোতোয়ালি থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার দেহের ময়নাতদন্ত হবে হাসপাতাল মর্গে। সেই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।