১৯ এপ্রিল, ২০২৪

Durga Puja: এবার কোচবিহারের অন্যরূপে বড় দেবীর আরাধনা, পুজোয় রয়েছে বলি প্রথা
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2022-09-10 18:15:52   Share:   

রাজার শহর কোচবিহার (Cooch Behar)। আর বড় দেবী হলেন রাজার পরম আরাধ্য। ৫০০ বছর ধরে দেবীর কৃপাদৃষ্টি বর্ষিত হচ্ছে আপামর কোচবিহারবাসীর উপর। বিশ্বাস অনেকটা এরকমই। বড় দেবীর পুজোর পিছনে রয়েছে অবিশ্বাস্য কিছু কাহিনী। এই পুজোর সূচনা হয় কোচ বংশের প্রথম রাজা বিশ্ব সিংহের হাত ধরে। তবে দেবী রূপ পেয়েছে মহারাজা নর নারায়ণের সময় থেকে। কাহিনী বলে রাজা বাল্যকালে আসামের (Assam) চিকনা পাহাড়ে খেলার সময় এক টুকরো ময়না কাঠকে দেবী রূপে পুজো করেছিলেন। এরপর খেলার ছলে কেন্দু পাতার তৈরি নকল খড়গ দিয়ে বন্ধুর গলায় আঘাত করলে তার শির ধর থেকে ছিন্ন হয়ে যায়। পরে দেবীর স্বপ্নাদেশে পুজো শুরু হয়। শ্রাবণের শুক্লাষ্টমীতে ডাঙরাই মন্দিরে দেবী রূপে ময়না কাঠের পুজো শুরু হয়। এরপর সেই কাঠ নিয়ে আসা হয় মদনমোহন মন্দিরে। এরপর কৃষ্ণ অষ্টমীতে বড় দেবী মন্দিরে বিশেষ পুজো অনুষ্ঠিত হয়।
বড় দেবীর বর্তমান রূপ নিয়েও একটি কাহিনী রয়েছে। রাজা নরনারায়ণ অসম যুদ্ধে যাওয়ার সময় দেবী তাঁকে স্বপ্ন দেন। এরপর তিনি সংকোষ নদীর পাড়ে রক্তবর্ণ দেবী মূর্তি গড়ে পুজো দেন।  পরবর্তীতে উনিশ শ পনের সালে মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ন মন্দির তৈরি করেন। রাধা অষ্টমীতে বিশেষ পূজার পর তিনদিন ময়না কাঠকে হাওয়া খাওয়ানো হয়। এরপর শুরু হয় মূর্তি তৈরি কাজ। রাজ আমল থেকে এই মূর্তি তৈরি করে আসছেন চিত্রকর পরিবার।
বর্তমানে এ পূজা আয়োজন ও পরিচালনার দায়িত্ব রয়েছেন কোচবিহার জেলা শাসক। এ পুজোয় রয়েছে বলি প্রথা। পূর্বে নরবলি দেওয়া হত। অষ্টমীর রাতে গুপ্ত পুজোর মধ্যে দিয়ে মাকে নররক্ত উত্সর্গ করা হত। বর্তমান নরবলি বন্ধ হলেও রক্ত উত্সর্গ প্রথা রয়েছে। মহা অষ্টমীতে দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ড সভাপতি তথা কোচবিহার জেলা শাসক বিশেষ পূজায় অংশ নেন। তিনি অঞ্জলী দেওয়ার পর সাধারন মানুষ অঞ্জলি দেন। এই পুজো ঘিরে সাধারণের উত্সাহ চোখে পড়ার মত।
আদলের দিকথেকেও এই প্রতিমা ভিন্ন। লক্ষ্মী গণেশ কার্তিক সরস্বতী বদলে বড় দেবীর সঙ্গে থাকেন তার দুই সখী জয়া ও বিজয়া। বড় দেবীর পূজার সাথে জড়িয়ে রয়েছে কোচবিহার জেলার মানুষের আবেগ। বড় দেবীর পূজা কে কেন্দ্র করে কোচবিহার দেবীবাড়ি চত্বরে বসে বিশাল মেলা । প্রথা মেনে দশমীতে বড় দেবী বিসর্জন হয়। সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন গৃহনারিরা।


Follow us on :