ফলের রাজা আম। সেই আম খেতে ভালোবাসেন না, এমন মানুষ আছেন কি কেউ? দীর্ঘ কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় ছেদ ফেলে এবার উৎপাদন ঘাটতির জেরে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে না বাঁকুড়ার আম। কিন্তু দিল্লির আমমেলায় পাড়ি দিচ্ছে বাঁকুড়ার আম্রপালি। ফলে দিল্লিবাসী এবারও লাল মাটিতে উৎপাদিত আম্রপালি প্রজাতির আমের স্বাদ গ্রহণ করতে পারবেন। আজই ট্রেনে করে ৬ মেট্রিক টন আম নিয়ে রওনা দিচ্ছেন বাঁকুড়ার আম চাষিরা। আম মিলবে কলকাতাতেও।
গত কয়েক বছরে আমের বাজারে মালদা ও মুর্শিদাবাদের একাধিপত্যে ভাগ বসিয়েছে বাঁকুড়া জেলা। হিমসাগর, ফজলি, বেগুনফালি আমের সঙ্গে স্বাদে গন্ধে সমানে সমানে টক্কর দিচ্ছে বাঁকুড়ার আম্রপালি। বর্তমানে শুধু জেলার চাহিদা মেটানোই নয়, ভিন জেলা এমনকি ভিন রাজ্যেও এখন বেশ চাহিদা বাঁকুড়ায় উৎপাদিত আম্রপালির। গত কয়েকবছর দেশের সীমানা ছাড়িয়ে একাধিক মধ্যপ্রাচ্যের দেশেও পাড়ি জমিয়েছিল আম্রপালি। কিন্তু এবার বিধি বাম। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় আমহীন বাঁকুড়ার অধিকাংশ আমবাগান। ফলে একের পর এক বিদেশে রপ্তানির বরাত বাতিল করতে হয়েছে।
নিজেদের দেশীয় বাজার ধরে রাখতে বিভিন্ন বাগান থেকে আম সংগ্রহ করে এবার কিছু পরিমাণ আম পাঠানো হচ্ছে দিল্লির আমমেলায়। জেলার উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গেছে, ১৬ জুন থেকে ১৫ জুলাই দিল্লিতে আয়োজিত আম মেলায় কিছুটা দেরিতে হলেও ৬ টন আম নিয়ে হাজির হচ্ছেন বাঁকুড়ার আমচাষিরা। প্রয়োজনে দ্বিতীয় দফাতেও কিছু পরিমাণ আম পাঠানো হতে পারে। ২৩ জুন থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত কলকাতার আমমেলাতেও আম পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে উদ্যান পালন দফতরের পক্ষে।
চলতি বছর আমের ফলন মাত্র ৩০ শতাংশে নেমে আসায় এমনিতেই মন খারাপ জেলার আম চাষিদের। বড়সড় লোকসানের আশঙ্কায় দিন কাটছিল তাঁদের। তবে অবশেষে দিল্লির আমমেলায় আম যাওয়ায় একটু বেশি দামে তা বিক্রি করে লক্ষ্মীলাভের আশা করছেন জেলার আমচাষি থেকে শুরু করে জেলার উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিকরা।