যাত্রীদের গন্তব্যে ছেড়ে রাস্তার ধারে টোটো দাঁড় করিয়ে রেখে পাশের দোকানে চা খেতে গিয়েছিলেন চালক। আর সেই সময়ই টোটোর পিছনের সিটে চেপে বসে এক অসুস্থ বাঁদর। ব্যাস, তারপর ঘন্টা দুয়েক আর টোটো থেকে নামানো যায়নি বাঁদরটিকে। অগত্যা রুজিরুটির বারোটা বাজিয়ে টোটোচালক ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন বাঁদরের মর্জি বদলের অপেক্ষায়। অবশেষে খবর পেয়ে বনকর্মীরা হাজির হয়ে সেই টোটোতে চাপিয়েই বাঁদরটিকে নিয়ে গেলেন বন দফতরে। ঘটনাটি বাঁকুড়ার কলেজ মোড় এলাকার।
আর পাঁচজন টোটোচালকের মতোই বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা সৌমেন ঘোষ নিজের টোটো নিয়ে সকাল থেকে বেরিয়ে পড়েন বাঁকুড়া শহরের রাস্তায়। শহরের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে যাত্রী পরিবহণ করেই চলে তাঁর সংসার। এদিন সকালেও তাঁর রুটিনের অন্যথা হয়নি। কিন্তু তাল কাটল দুপুর বেলায়। বাঁকুড়ার কলেজ মোড় এলাকায় রাস্তার ধারে ফাঁকা টোটো রেখে পাশেই চায়ের দোকানে চা খেতে যান সৌমেন। ফিরে এসে দেখেন, টোটোর পিছনের সিট দখল করে দিব্যি পিঠটান দিয়ে ঘুমোচ্ছে এক বাঁদর। প্রথমে বাঁদরটিকে টোটো থেকে নামানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেন ওই চালক। কিন্তু টোটো থেকে নামার নামটিও করেনি বাঁদরটি।
সৌমেন লক্ষ্য করেন, বাঁদরটির পায়ে আঘাত রয়েছে। অসুস্থ বাঁদরটিকে আর বিরক্ত না করে অগত্যা টোটো সেখানেই দাঁড় করিয়ে রেখে বাঁদরটির মর্জি বদলের অপেক্ষায় দীর্ঘক্ষণ থাকতে হল ওই টোটো চালককে। প্রায় ঘন্টা দুয়েক পর অবশ্য বন দফতরের কর্মীরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এলেন। কিন্তু অসুস্থ বাঁদরটিকে টোটো থেকে নামাতে না পেরে শেষমেশ টোটো সহ বাঁদরটিকে নিয়ে গেলেন শহরের লোকপুর এলাকায় থাকা বন দফতরে। স্থানীয় বাসিন্দা ও বন দফতরের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, বাঁদরটি কোনওভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার জেরেই তার এমন আচরণ। বন দফতর জানিয়েছে, বাঁদরটি চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে উঠলে তাকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে।