বাপের বাড়ি থেকে ফ্রিজ না আনায় বধূকে প্রথমে পিটিয়ে, পরে প্রমাণ লোপাটের জন্য গায়ে আগুন লাগিয়ে নির্মম হত্যা (murder)। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি বসিরহাটের (basirhat) হাড়োয়া থানার সোনাপুকুর-শংকরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুচিয়ামোড়া গ্রামের। জানা যায়, মৃত গৃহবধূর নাম আলপনা মণ্ডল (২৪)। শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে হাড়োয়া থানায় (haroa police station) খুন ও প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বধূর বাবা অনিন্দ্র সরকার। তিনি উত্তর ২৪ পরগণার দত্তপুকুর (duttapukur) থানার জয়পুল এলাকার বাসিন্দা।
মৃত তরুণীর বাবার দাবি, বছর তিনেক আগে দেখাশোনা করে সামাজিক মতে বিশ্বজিৎ মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়। শ্বশুর-শাশুড়ির দাবিমতো বিয়েতে যৌতুক দেওয়া হয়। কিন্তু বিয়ের পরে আরও পণের দাবিতে বাপের বাড়ি থেকে টাকা ও জিনিসপত্র আনার জন্য চাপ দিয়ে বধূকে অত্যাচার (torture) ও নির্যাতন করত অভিযুক্তরা। জামাই বিশ্বজিৎ কর্মসূত্রে কলকাতায় থাকেন। খুব ভালো ছেলে, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই বলে দাবি মৃত গৃহবধূর বাবার। অভিযোগ, দিনকয়েক ধরে বাপের বাড়ি থেকে ফ্রিজ আনার জন্য চাপ দিয়েছিল শ্বশুর রবীন মণ্ডল ও শাশুড়ি গীতারানি মণ্ডল। আর তা এনে দিতে না পারায় বুধবার বধূর স্বামী বাড়ি না থাকার সুযোগে, গৃহবধূকে রান্না ঘরে এলোপাথাড়ি মারধর করে প্রথমে শ্বাসরোধ করা হয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে এবং প্রমাণ লোপাটের চেষ্টায় গৃহবধূর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
তবে প্রতিবেশীরা ঘটনা আঁচ করতে পেরে হাড়োয়া থানায় খবর দিলে পুলিস অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূরকে উদ্ধার করে হাড়োয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিল গৃহবধূর শ্বশুর ও শাশুড়ি। এরপর হাড়োয়া থানার পুলিস আজ ভোরে হাড়োয়া থেকে মৃত গৃহবধূর শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রেফতার করে। আজ বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হয় তাঁদের। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে শুধুই কি ফ্রিজ না অন্য কোনও কারণে এই মৃত্যু? তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। মৃত বধূর পরিবার অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।