সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর সাহিত্যের নিরলস সাধনার স্বীকৃতি হিসাবে পুরস্কার প্রদান করায় নিজের বাংলা অ্যাকাডেমির পুরস্কার ফিরিয়ে দিলেন বিশিষ্ট লেখিকা ও শিল্পী রত্না রশীদ বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবারই তিনি বাংলা অ্যাকাডেমিতে ই-মেলের মাধ্যমে তাঁর এই পুরস্কার ফিরিয়ে দেবার বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছেন।
মঙ্গলবার বর্ধমানে নিজের বাসভবনে অসুস্থ ৬৭ উর্ধ্ব রত্না রশীদ বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তাঁর এই পুরস্কার ফিরিয়ে দেবার বিষয়টি ঘোষণা করেছেন। ২০০৯ সাল এবং ২০১৯ সালে দুবার তিনি বাংলা অ্যাকাডেমির পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। মঙ্গলবার তিনি জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের ২৬ জুলাই বাংলা অ্যাকাডেমির পক্ষ থেকে তাঁকে অন্নদাশঙ্কর রায় স্মারক সম্মানে ভূষিত করা হয়। সেই সময় তিনি সেই সম্মান কৃতজ্ঞ চিত্তে গ্রহণও করেন। কিন্তু সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অ্যাকাডেমি একটি নতুন পুরস্কার ঘোষণা করে। প্রারম্ভিক বছরের সেই পুরস্কার পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে অর্পণ করা হয়েছে বাংলা সাহিত্যে তাঁর নিরলস সাধনার স্বীকৃতি হিসাবে। এর চেয়ে সত্যের বড় অপলাপ আর কিছু হতে পারে না। মুখ্যমন্ত্রীকে এই পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা অ্যাকাডেমি শুধুমাত্র একটি ন্যক্কারজনক দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে তাই নয়, এর মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের সত্যিকারের নিরলস চর্চায় রত সমস্ত মানুষকে অপমানিত করা হয়েছে। এই অবস্থায় ২০১৯ সালে এই সরকারের তাঁকে দেওয়া সম্মান তাঁর কাছে কাঁটার মুকুটের মতো প্রতীয়মান হচ্ছে। তাই তিনি ওই সম্মান ফিরিয়ে দিচ্ছেন।
রত্নাদেবী জানিয়েছেন, তিনি ই-মেলের মাধ্যমে তাঁর এই প্রতিবাদ পাঠিয়ে দিয়েছেন। যেহেতু তিনি অসুস্থ, তাই লোকমাধ্যমে খুব শীঘ্রই তিনি পুরস্কারটি বাংলা অ্যাকাডেমিতে পাঠিয়ে দেবেন।
কিন্তু কেন এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান? রত্নাদেবী জানিয়েছেন, মমতা বন্দোপাধ্যায় ওই পুরস্কার পাবার যোগ্য নন। তাঁরই উচিত হয়নি ওই পুরস্কার নেওয়া। নির্লজ্জ চাটুকারিতা করেছে বাংলা অ্যাকাডেমি। তিনি জানিয়েছেন, অনেকেই তাঁকে এই প্রতিবাদ করা থেকে বিরত করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু তিনি থাকতে পারেননি। আর তাই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এদিকে, খোদ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের পুরস্কার পাবার পর রত্না রশীদ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রতিবাদকে ঘিরে রীতিমতো সরগরম হয়ে উঠেছে গোটা জেলা।