Share this link via
Or copy link
ভাড়াটের অস্বাভাবিক মৃত্যু (Unnatural Death)। ঘটনায় গ্রেফতার (Arrestesd) করা হয়েছে বাড়ির মালিকের ছোট ছেলেকে। তাঁর বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের (Murder) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) শহর সংলগ্ন গোমস্তাপাড়ায়। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম অশোক মাঝি। পেশায় রং মিস্ত্রির কাজ করেন। ওই ব্যক্তি তাঁর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী লক্ষী মাঝিকে নিয়ে গোমস্তাপাড়ার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। কয়েকটি বাড়ি পরেই থাকতেন বাড়ির মালিক চিত্তরঞ্জন দাস এবং তাঁর পরিবার। বুধবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ ভাড়াটে অশোক মাঝির রক্তাক্ত, অচৈতন্য দেহ বাড়ির পিছনে একটি রাস্তায় পাওয়া যায়। পরিবারের লোকেরা উদ্ধার করে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মৃত ব্যক্তির মেয়ে স্বপ্না মাঝি। মৃত ব্যক্তির বড় মেয়ে পিংকি মাঝি ও ছোট জামাই সাগির আলমের অভিযোগ, বুধবার রাতে আচমকাই অশোক মাঝি ও তাঁর স্ত্রীকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেন চিত্তরঞ্জন দাস। এই নিয়ে বচসা শুরু হয়। তখন বাড়ির মালিকের ছোট ছেলে অলোক দাস অশোকবাবুকে ব্যাপক মারধোর করেন। ভয়ে অশোকবাবু ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দেন। তাঁকে ঘর থেকে বের করে ফের মারধর করা হয় এবং ভোজালি দিয়ে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ।
লিখিত অভিযোগে বাড়ির মালিক, তাঁর ছোট ছেলে সহ অন্যান্য ভাড়াটিয়াদের নামেও অভিযোগ করা হয়েছে। মৃতের স্ত্রী,ছোট মেয়ে জামাইকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। মৃতের স্ত্রী লক্ষী মাঝি জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন।
ঘটনাস্থলে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রাজেশ মণ্ডল এবং স্থানীয় ক্লাবের ছেলেরাও উপস্থিত ছিলেন। পঞ্চায়েত সদস্য এবং অন্য ভাড়াটেদের কাছ থেকে অবশ্য ঘটনার অন্য বিবরণ পাওয়া গিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, মৃত অশোকবাবু এবং তাঁর স্ত্রীর মধ্যে নিত্যদিন অশান্তি চলত। বুধবারও দিনভর ঝগড়া চলছিল স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। রাতে বাড়ির মালিক চিত্তরঞ্জন দাস আসে এবং তাঁদের বাড়ির ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। তখন অশোকবাবু বাড়ির মালিক চিত্তরঞ্জন দাসকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। এরপর ভয় পেয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। এরপর ঘরের বেড়ার টিন ভেঙ্গে, দেওয়াল টপকে পালিয়ে যায় এবং বাড়ির পিছনের রাস্তায় পড়ে যায়। সেইসময় টিন এবং দেওয়ালে আঘাত লেগে তাঁর মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে বলে দাবি স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রাজেশ মণ্ডলের।
ওই এলাকাতেই বাড়ি বিজেপি সেলের সদস্য আশিষ সরকারের। তাঁর বক্তব্য, ঘটনা যাই ঘটুক না কেন, স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সেখানে উপস্থিত থেকেও আটকাতে পারলেন না কেন? তিনি পুলিসি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা উদঘাটনের দাবি তুলেছেন।
ঘটনার পরই বাড়ির মালিকের ছোট ছেলে অলোক দাসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছিল কোতোয়ালি থানার পুলিস। বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিস এবং জলপাইগুড়ি মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদলতে পেশ করে। বিচারক ১৪দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।