রবীন্দ্রভারতীর নতুন উপাচার্য হিসাবে মহুয়া মুখোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করে দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। আর সেটাই হয়ে উঠেছে আগুনে ঘৃতাহুতির সমান। তৃণমূলের অভিযোগ, রাজ্যপাল সম্পূর্ণ আইন-বিরুদ্ধ কাজ করেছেন। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বলেছিলেন, রাজ্যপাল গণতান্ত্রিক নিয়ম ও আইন মানেন না। তিনি মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা না বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এই বক্তব্যের পরই কড়া প্রতিক্রিয়া দিল রাজভবন। রাজভবনের তরফ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজ্যপাল তথা আচার্যের পদাধিকার বলে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি যে উপাচার্য নিয়োগ করেছেন, তা নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্ররা প্রকাশ্যে যে বিবৃতি দিচ্ছেন, তা দুর্ভাগ্যজনক। বলা হল, রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রী বা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কথা না বলেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু ২৪ জুন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু রাজ্যপাল তথা আচার্যের কাছে এ বিষয়ে নোট পাঠিয়েছিলেন। আচার্য হিসেবে জগদীপ ধনকর রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্য বিভাগের অধ্যাপিকা মহুয়া মুখোপাধ্যায়কে উপাচার্য পদে নিয়োগ করলেন। ১৯৮১ সালের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় আইনের (১)(বি) ধারা মেনেই তিনি তা করেছেন।
বার বার শাসকদল রাজভবনের বিরুদ্ধে বিল আটকে রাখার অভিযোগ তোলে। সেই প্রসঙ্গেও রাজ্যপাল বিবৃতিতে বলেন, রাজভবনের বিবেচনায় থাকা কোনও বিল আটকে নেই। কিন্তু বিধানসভার অন্দরে যে আচার্য বদল বিল নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা অসম্পূর্ণভাবে রাজভবনে পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় নথি হাতে পেলেই দ্রুততার সঙ্গে বিলটি ছেড়ে দেওয়া হবে।
আচার্য যেভাবে উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন, তা আইন বহির্ভূত। ৩০ শে জুন রাজ্যপাল এই বিজ্ঞপ্তি সামনে এনেছেন। তার আগেই বিধানসভায় আচার্য পদ পরিবর্তনের বিল পাশ হয়েছে। ২০১৯ সালের সংশোধিত আইন অনুযায়ী রাজ্যপালের কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। উপাচার্য নিয়োগ তাঁর অধিকারের মধ্যে পড়ে না, টুইট করে এভাবেই রাজ্য সরকারের বক্তব্য জানিয়ে দেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।
অর্থাত্, তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, আচার্য যেহেতু হতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তাই উপাচার্য বদলের সিদ্ধান্ত রাজ্যপাল নিতে পারেন না। ফলে সেই সিদ্ধান্তও তাঁরা মানতে বাধ্য নন। যদিও আচার্য বদলের বিলে রাজ্যপাল এখনও সই করেননি। ফলে আইনগত জটিলতা কিন্তু রয়েই গিয়েছে।