বিরোধী দলকে মিটিং, মিছিল, অভিযান ইত্যাদি কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে পুলিস। আইনি পরিস্থিতির কারণে বাধা বলে দেখানো হচ্ছে। সম্প্রতি নাকাশিপাড়া এলাকায় সভা করতে দেওয়া হয়নি। সেখানে সাম্প্রদায়িক অশান্তির অজুহাত দিচ্ছে পুলিস। এইসব অভিযোগ নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুনানি শেষ হলেও রায়দান স্থগিত রেখেছেন বিচারপতি।
বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্যে যে কোনও সভা বা মিটিং-এর অনুমোদন দিচ্ছে না পুলিস।অভিযান করতে গেলে আটকানো হচ্ছে। অথচ রাজ্য বার বার আদালতে জানাচ্ছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক। যদি তাই হয়, তবে কেন প্রতিবাদমূলক কর্মসূচি করতে দেওয়া হচ্ছে না? প্রশ্ন বিরোধীদের।
আজ সেই মামলার শুনানিতে আবেদনকারীর আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী বলেন, রাজ্য আদালতে জানিয়েছিল, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক। তাহলে বিরোধীরা কোনও প্রোগ্রাম করতে গেলে কেন আইনশৃঙ্খলার দোহাই দিয়ে অনুমোদন দেওয়া হয় না। যেমন ২০ জুন নাকাশিপাড়ায় একটা সভা করার অনুমোদন চেয়েছিল বিরোধী দল। পুলিস অনুমতি দেয়নি। ২১ জুন জেলা ম্যাজিস্টেটের কাছে একটা রিপোর্ট দিয়ে পুলিস জানায়, আইনি পরিস্থিতি ভালো নয়। জারি করা হল ১৪৪ ধারা। বলা হল, সাম্প্রদায়িক অশান্তি হতে পারে। তাই এখন কোনও মিটিং-মিছিল করা যাবে না। গণতান্ত্রিক অধিকারে বাধা দিচ্ছে রাজ্য। যে কোনও জায়গায় যখন খুশি ১৪৪ ধারা জারি করা যায় না। তার নিয়ম আছে। নকাশিপাড়ায় তা মানা হল না। ১৪৪ ধারা জারি করা মানে গণতান্ত্রিক মতপ্রকাশে বাধা দেওয়া। শুধুমাত্র বিরোধী দলকে সভা করতে না দিতে ১৪৪ ধারা জারি করা যায় না।
রাজ্য উত্তরে জানায়, এটা একজন ব্যক্তি করেছে, কোনও দল নয়। এই ধরনের অভিযোগ আদালতের বাতিল করা উচিত। ঘটনার সূত্রপাত, একটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল হাওড়ার অঙ্কুরহাটি এলাকায় একটা গন্ডগোল নিয়ে। পরিস্থিতি অস্বাভাবিক ছিল। পরে শান্ত হয়। রাজ্য রিপোর্ট দেয়। ১৪ জুনের একটি রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযোগ করা হয়েছে। নাকাশিপাড়া দেশবন্ধু পাঠাগারে ১৩ জুন প্রতিবাদের ঘটনা ঘটেছিল। সেই পাঠাগারের কাছে মিটিংয়ের অনুমতি চাওয়া হয়। তখন পরিস্থিতি আয়ত্তে ছিল না। নকশিপাড়ায় ১৪৪ ধারা জারি করার যথেষ্ট কারণ ছিল। বিরোধীদের কোনও অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয় না, এই অভিযোগ ভুল। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রথযাত্রা সহ সম্প্রতি বিজেপির নানা অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির কারণে কিছু কিছু জায়গায় কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয় পুলিসকে।