১৯ এপ্রিল, ২০২৪

Kite: প্রযুক্তির বিবর্তনে ঘুড়ি উড়ানো কি বিলুপ্তপ্রায়, এখন ক'টা বাড়ির ছাদে শোনা যায় ভো কাট্টা?
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2022-09-17 13:51:31   Share:   

প্রসূন গুপ্ত: ঘুড়ি ওড়ানো কিন্তু ভারতীয় সংস্কৃতির আদি উৎসব। শোনা যায় এই ঘুড়ির আমদানি কিন্তু এ দেশে ইসলামিক দেশ থেকে এসেছিল ১৭০০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ। এ দেশে মুসলিম সমাজে ঘুড়ি ওড়ানোর চল ছিল। ইতিহাস ঘাটলে ইব্রাহিম লোদীর আমলে ঘুড়ির চল পাওয়া যায়। মুঘল সম্রাটরা কোনও রাজ্য জয়ের পর উৎসবের মধ্যে ঘুড়ি উড়ানোর আদেশ দিতেন। সম্রাট আকবরের প্রিয় খেলার একটি ছিল ঘুড়ি ওড়ানো। একইসঙ্গে সুতো কাটাকাটি করে ঘুড়িকে ভোকাট্টা করার পদ্ধতিও চালু ছিল। সম্রাটদের ঘুড়ির সুতো কাটার সাহস কারও ছিল না। কিন্তু প্রাসাদের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কর্মচারীরা ঘুড়ি উড়াতেন এবং কাটাকাটি চলতো।  সম্রাটদের ছিল এটাই আনন্দের। পরবর্তী আমলে ব্রিটিশ যুগে সাহেবরাই দেশব্যাপী চালু করেছিল ঘুড়ির উৎসব।

বৃহৎ বাংলায় ঘুড়ি ওড়ানোর চল ছিল বিশ্বকর্মা পুজোকে কেন্দ্র করে।এরও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। ভাদ্র মাসের এই সময়ে আবহাওয়াতে বায়ুর সঙ্গে জল মিশ্রিত থাকে কাজেই বাতাসের বিক্ষিপ্ত ভাবে বয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে কম। এই আবহাওয়ায় ঘুড়ি ওড়ানো সবথেকে সোজা। কিন্তু কোনওভাবেই বিশ্বকর্মা পুজোর সঙ্গে ঘুড়ির কোনও সম্পর্ক নেই | বিশ্বকর্মা পুজো প্রধানত কারিগরদের এবং শ্রমজীবী মানুষের উৎসব। গাড়ির মালিকরাও বিশ্বকর্মা পুজোয় অংশ নেয়। কিন্তু ঘুড়ির বিষয়টি একেবারে আলাদা। তবুও দেখা গিয়েছে বিশ্বকর্মার হাতে কেউ কেউ একটি বাজার থেকে কেনা ঘুড়ি লাগিয়ে দেন।

এসব বিষয়ে বাদ দিয়ে ঘুড়ি বা সুতো এবং লাটাইয়ের চল কিন্তু পাল্টায়নি। ঘুড়ির সুতোয় মাঞ্জা দেওয়া দরদাম করে নানা জাতের ঘুড়ি কেন। একসময় বাঙালি জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছিল। বিশ্বকর্মা পুজোর দিন বা তার আগে একসপ্তাহ প্রতিটি বাঙালি পাড়ায় ছাদ থেকে ঘুড়ি উড়তো। পেটকাটি, চাদিয়াল, ময়ূরপঙ্খী ঘুড়ির চল আর দূর থেকে শোনা যেত ভো কাট্টা শব্দ। তখনকার উত্তমকুমার থেকে পঙ্কজ রায় কিংবা অজিত পাঁজাদের ঘুড়ি ওড়ানোর উৎসব হতো। আজ যুগ পাল্টেছে, আকাশে ঘুড়ি পাওয়া যায় কোথায়? আজকের তরুণ প্রজন্মের কাছে ঘুড়ি ওড়ানোর থেকে সোশ্যাল নেটের পিছনে সময় দেওয়াটাই জরুরি।


Follow us on :