আর স্কুলেই (School) যেতে চাইছে না একরত্তি মেয়েটি। তার ভয়, দিদিমণি যদি আবার মারে, কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখে। ইতিমধ্যেই মেয়েকে স্কুলে মারধর করার অভিযোগে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই ছাত্রীর মা। যদিও সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত তিনি। তবে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এমনই ঘটনা জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) শহরের একটি সরকারি ইংরেজি মাধ্যম প্রাইমারি স্কুলের (Primary school)।
স্কুলের কাছেই বাড়ি ওই শিশুকন্যার। বাবা টোটোচালক, মা গৃহবধূ। বাড়ির কাছে সরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থাকায় সেখানেই মেয়েকে ভর্তি করিয়েছিলেন বাবা-মা। বছর পাঁচেকের মেয়েটি প্রি-প্রাইমারির ছাত্রী। অভিযোগ, গত মঙ্গলবার এ-বি-সি-ডি থেকে জেড পর্যন্ত পুরোটা লিখতে না পারার জন্য ওই ছাত্রীকে মারধর করেন এক শিক্ষিকা। পাশাপাশি, দীর্ঘক্ষণ তাকে কান ধরিয়ে রাখা হয় বলে অভিযোগ। ছাত্রী বারবার বসতে চাইলেও তাকে বসতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। এরপর ছাত্রী বাড়ি এসে সব কথা মাকে জানায়। পরেরদিন মা মেয়েকে নিয়ে স্কুলে যান। তাঁর সঙ্গে কয়েকজন অভিভাবকও ছিলেন। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিষয়টি নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেন। কিন্তু অভিযুক্ত শিক্ষিকা সহ দুই শিক্ষিকা তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। ছাত্রীর মায়ের অভিযোগ, অভিযুক্ত শিক্ষিকা "ডোণ্ট কেয়ার সুরে" বলেন, যান থানায় গিয়ে অভিযোগ করুন।
এরপরই জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করে ছাত্রীর মা। ছাত্রীর মায়ের দাবি, কিছুদিন আগে দেরি করে স্কুল খোলায়, অভিভাবক হিসেবে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তিনি। সেই ঘটনার থেকে রাগের জেরেই তাঁর মেয়ের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
ওই ছাত্রীর এক সহপাঠিনীও জানিয়েছে, তার সামনেই মেয়েটিকে মারা হয়েছে। এক অভিভাবকের অভিযোগ, দিনকয়েক আগে তাঁর ছেলেকেও মেরেছিলেন ওই শিক্ষিকা।
এদিকে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার স্কুলে অভিভাবকদের নিয়ে মিটিং করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই মিটিং এ ওই ছাত্রীর মাকে ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ। মিটিং এরপর স্কুলের শিক্ষিক, শিক্ষিকা সহ বেশ কয়েকজন অভিভাবক ওই ছাত্রীর বাড়িতে যান। ছাত্রীর মায়ের অভিযোগ, তাঁকে বোঝানোর নাম করে অভিভাবকরা একপ্রকার হুমকি দেয়।
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিভাবক এবং স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অভিজিৎ সরকার দাবি করেছেন, ওই ছাত্রীর মা অতিরঞ্জিত করে বলছেন। পড়া না পারায় সামান্য শাসন করেছিলেন শিক্ষিকা। এদিন অভিভাবকদের নিয়ে মিটিং এর জন্য একাধিকবার ফোন করা হলেও ছাত্রীর মা ফোন ধরেননি বলে জানিয়েছেন অভিজিৎ বাবু।