তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী (chief minister) হওয়ার পর তিনদিনের জঙ্গলমহল সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ পুরুলিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠক (administrative meeting) সারেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে এবার শুধু প্রশাসনিক বৈঠকই নয়, মঙ্গলবার দলের কর্মিসভাও করবেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন পুরুলিয়াতে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। ৩৫টি প্রকল্পের (project) উদ্বোধন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যার অর্থমূল্য ২৮৮ কোটি টাকা।
এদিনের বৈঠকে জেলা প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, কিছু কাজ ৫-৬ বছর ধরে পড়ে আছে। বহু প্রকল্পের কাজ অর্ধেক হয়ে পড়ে আছে। সেগুলির প্রক্রিয়া চলছে বলে দেখানো হচ্ছে। আন্ডার প্রসেস খায় নাকি মাথায় দেয়, কেন সময়ে কাজ হচ্ছে না? জেলাশাসককে ভর্ত্সনা মুখ্যমন্ত্রীর।
এছাড়া বিএলআরও-তে গিয়ে মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বলরামপুর ব্লকের রাজীব হেমব্রমের বাবা মারা গেছে ১১ বছর আগে। জমি মিউটেশন করতে টাকা চাওয়া হয়েছে। বিএলআরও দফতরের দালাল দোকানঘর থেকে টাকা চাইছে। মিউটেশন করতে দিচ্ছে না। মিউটেশন করতে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত চাইছে। আমি চাইছি এটা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে। এদিন মঞ্চে প্রতারিত মানুষদের তুলে ধরে সরাসরি অভিযোগ শোনান মুখ্যমন্ত্রী। অভিযোগকারী পরিবারকে কেউ যদি ধমকায়, চমকায়, আমি তাদের গ্রেফতার করব বলে কড়া বার্তা দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রশ্ন করেন,পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের মেম্বারদের কাছে অভিযোগ যায় না? দালালদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। মানুষ যাতে পরিষেবা পান, তা দেখতে হবে, এদিন জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
গভর্নমেন্টের মতো স্কিম, ইনোভেশন কেন নেই? মুখ্যমন্ত্রী উদাহরণ দিয়ে বলেন, দক্ষিণ ২৪ পরগনা দুয়ারে সরকারের ফর্ম তৈরি করে সুন্দরবনে বিলি করেছে। তিনি বলেন, আমরা অনলাইন করে দিয়েছি। তা সত্ত্বেও আদিবাসীরা নাম লিখতে পারছে না। ৩ মাস সময় দিলাম। আদিবাসী মানুষদের কাছে যাবেন। প্রশাসনকে কড়া নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। আদিবাসীদের জমি যদি কারোর হাতে চলে যায় তাহলে বিএলআরওর নামে এফআইআর হবে।
এদিন আরও কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, জমি মিউটেশন নিয়ে যারা এসব করছে, আমার পার্টির লোক হলে টেনে চড় মারতাম। কীভাবে জেলা চালাচ্ছ? জেলাশাসককেও তীব্র ভর্ৎসনা মুখ্যমন্ত্রীর।
এছাড়া, জেলার ১১ বছরের কাজের খতিয়ান কেন ইংরেজিতে হল, স্থানীয় বাংলা বা অলচিকি ভাষায় কেন হল না, তার জন্য অসন্তোষ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। স্থানীয় ভাষায় তৈরি না করে যেন খতিয়ানের পুস্তিকা না ছাড়া হয়। জেলাশাসককে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
ট্যুরিজম দফতরকে আরও বেশি হোম স্টে করার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
পাশাপাশি, এদিন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে সরব হন তিনি।