Share this link via
Or copy link
ফের বোমার ঘায়ে (Bomb Blast) রক্তাক্ত শৈশব। এবার বীরভূমের (Birbhum) মাড়গ্রাম থানার একডালা গ্রামে বোমা ফেটে মৃত এক শিশু। জানা গিয়েছে, ঘটনার ৫ দিন পর কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে (SSKM Hospital) চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোর ৪টে নাগাদ মৃত্যু হয় বছর ছয়ের সোহন শেখের। চোখ গুরুতর জখম অবস্থায় চিকিৎসাধীন তার তুতো ভাই রোহন শেখ। দাদুর বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল ছয় বছরের সোহন এবং সাত বছরের রোহন শেখ। স্থানীয় তৃণমূল কর্মী তথা মৃত শিশুর দাদু জামিরুল ইসলামের মাটির বাড়ির চিলেকোঠায় খেলা করছিল দু'জন। শুক্রবার সকাল ১০টা নাগাদ বিস্ফোরণের শব্দ পান গ্রামবাসীরা।
জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণের তীব্রতায় দুটি শিশুর মুখ পুড়ে যায়, দু হাতে ক্ষত ছিল। ঘটনার দিন তাদের উদ্ধার করে রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তারপর বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং শনিবার কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় দুজনকেই। সেখানেই বুধবার ভোররাতে মৃত্যু হয় এক শিশুর। এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে খবর, বিস্ফোরণের জেরে তৈরি হওয়া ক্ষত বেশি থাকার কারণে, প্রেসার লো হয়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে সোহন শেখের। মুখমণ্ডল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এই মৃত্যু।
বিস্ফোরণের তীব্রতায় অনেকক্ষণ ঘরে বারুদের গন্ধ এবং দেওয়ালে চিড় দেখা গিয়েছে। যদিও অভিযুক্ত জামিরুলের দাবি, চকলেট বোমা নিয়ে খেলা করার সময় বিপত্তি। এমনকি, তিনি তৃণমূল কর্মী নয় বলে দাবি করলেও, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান জামিরুলের সঙ্গে শাসক দলের সম্পর্ক স্বীকার করে নিয়েছে। যদিও পরিবারের দাবি, জামিরুল কোন দল করেন না, সাধারণ কৃষক। এদিকে, ঘটনাস্থল থেকে কোনও বোমা উদ্ধার করেনি মারগ্রাম থানার পুলিস। তবে গ্রেফতার নিহত শিশুর দাদু জামিরুল ইসলাম। স্থানীয়রা অবশ্য দাবি করছেন, বিস্ফোরণের শব্দ চকলেট বোমা ফাটার মতোই। কিন্তু পুলিসের প্রাথমিক ধারণা, চকলেট বোমা বিস্ফোরণে এত বড় ঘটনা ঘটে না। বিস্ফোরক জাতীয় কিছু ছিল, এটা ধরেই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিস।
মৃতের পরিবারের দাবি, যে বাজি ছিল তাতে এমন কিছু বিস্ফোরক ছিল তার জেরে এত বড় ক্ষতি হয়েছে। ঘটনার পর মৃত সোহন শেখের মা জামিনা খাতুনের দাবি, 'বাড়িতে কোনও বোমা ছিল না। বিয়ের জন্য আনা আতসবাজির পুরনো প্যাকেট নিয়ে ওরা খেলছিল। প্যাকেট পুরনো দেখে আমরা ভেবেছিলাম কিছুই হবে না। কিন্তু তারপরেই বিস্ফোরণের শব্দ। কী থেকে কী হয়েছে কিছুই বুঝতে পারছি না। রোহন এবং সোহন পড়া দু'জনে সবসময় একসঙ্গেই থাকে।'
বুধবার সকালে জামিনা খাতুন জানান, 'বিয়ে বাড়ির আতসবাজির প্যাকেট খেলতে খেলতে পুরো ধরিয়ে দিয়েছিল। একটা একটা করে আগুন ধরালে হয়তো এই দুর্ঘটনা ঘটত না। এই ঘটনায় আমাদের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। আতসবাজির মধ্যে কী ছিল, কিছুই বুঝতে পারছি না। এমনকি আমার বাবাকে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাবা আমার ছেলেদের খুব ভালবাসতো।'