২৫ এপ্রিল, ২০২৪

Accident: 'রক্তে পিচ্ছিল ছিল কামরা,' ধ্বংসস্তুপ থেকে সহযাত্রীদের বাঁচিয়ে 'মৃত্যুঞ্জয়' বিশ্বজিৎ
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-06-06 17:36:26   Share:   

মণি ভট্টাচার্য: 'আমাদের ট্রেন ভীষণ স্পিডে যাচ্ছিল, ১ সেকেন্ডের মধ্যে যেন সব বদলে গেল।' বিশ্বজিতের কথায় ট্রেন দুর্ঘটনার (Accident) পর গোটা কামরা রক্তে পিচ্ছিল হয়ে পড়ে। মঙ্গলবার বিশ্বজিৎ বলেন, 'দুর্ঘটনার পর যখন দেখলাম নিজে বেঁচে আছি, যত জনকে পেরেছি এমার্জেন্সি জানলা দিয়ে ধ্বংসস্তূপের (Ruins) বাইরে বার করার চেস্ট করেছি।' স্বরূপনগরের বাসিন্দা বিশ্বজিৎ সর্দার দুর্ঘটনা কবলিত করমণ্ডল এক্সপ্রেসের (Coromondeal Express) এস২ কামরায় ৬৪ নম্বর আসনে ছিলেন। পেশায় নির্মাণ শ্রমিক বিশ্বজিৎ দীর্ঘ ১০ বছর ধরে কেরালায় থাকেন। এবারও সেখানেই যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু পথে এমন ঘটনা। 

সেদিনের গল্প শোনাতে শোনাতে এখনও মাঝে মাঝে কেঁপে ওঠে বিশ্বজিৎ, বিশ্বজিৎ বলেন, 'সবই ঠিক ছিল, হঠাৎ ভীষণ আওয়াজ, মুহূর্তে টের পেলাম আমাদের ট্রেন দুর্ঘটনার মুখে। পরে দেখলাম আমাদের কামরার এক অংশ পুরো গুড়িয়ে গেছে।' বিশ্বজিৎ জানায়, দুর্ঘটনার পর কিছুই মাথায় আসছিল না, দেখলাম রক্তে পুরো কামরা পিচ্ছিল হয়ে গেছে, আমি তখনই ঠিক করে নিয়েছিলাম যে আমি বেঁচে আছি যখন যতজনকে পারব উদ্ধার করব। এরপর ওই কামরার একটা এমার্জেন্সি উইন্ডো চোখে পরে, অন্যদিকে একটু আগেই যাকে দেখেছি তাঁর মৃতদেহ। সামনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রক্ত। ওই রক্ত মাড়িয়ে অন্যদের উদ্ধার করি। ঘটনার পর যেন শুধু বাঁচাও, বাঁচাও শব্দ শুনেছি। 


গল্প শোনাতে শোনাতে কেঁদেই ফেলে বিশ্বজিৎ, মঙ্গলবার সিএন-ডিজিটালকে বিশ্বজিৎ জানায়, দুর্ঘটনার পর ওই কামরায় ৩০ মিনিটের বেশি সময় ধরে জীবিত মানুষগুলোকে উদ্ধার করার চেষ্টা করে গেছে সে, বিশ্বজিৎ কিছু মৃতদেহ উদ্ধারেও সাহায্য করে স্থানীয়দের এমনটাই জানিয়েছে সে। জীবনে প্রথম এমন বড় দুর্ঘটনার মুখে পড়ে বেঁচে এসেছে ছেলে। এতে খুশি বিশ্বজিতের মা-বাবাও। মঙ্গলবার বিশ্বজিৎ বলেন, জীবনে এমন দুর্ঘটনা আর দেখতে চাই না। এই ঘটনার পর থেকে ঠিক মত খাওয়া-দাওয়া করতে পারছি না। যখনি খেতে বসছি ওদের মুখ গুলো মনে পড়ছে।'

আসলে এ ঘটনার পর বিশ্বজিতের মত অনেকেই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন। বিপদ কবলিত হয়েও সহযাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। হয়ত তাঁরা সাক্ষাৎ মৃত্যুকে জয় করে মৃত্যুঞ্জয় হয়েছেন। কিন্তু এই বিশ্বজিতের মত সাধারণ একজন, যে এত রাজনীতি বোঝে না, বোঝে না এত জটিলতা, সিগন্যাল ভুল, রেলমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, এসব যাদের কাছে অনেক দূরের কথা। তাদের জীবন বড্ড সাধারণ ভাবেই যাপন হয়। এত রক্ত, এত মৃত্যুর দুঃস্বপ্ন কবে কাটবে? কবে ফের সাধারণ জীবনযাপনে ফিরবে এ উত্তর বিশ্বজিৎদের কাছে নেই। ইনফ্যাক্ট কারোর কাছেই নেই।


Follow us on :