Share this link via
Or copy link
ভুয়ো নথি জমা করে লক্ষ লক্ষ টাকার বিল তোলার বড়সড় চক্রের পর্দা ফাঁস করল কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের (katwa hospital) যাচাই কমিটি। প্রায় এক কোটি টাকার ভুয়ো এবং অসংগতিপূর্ণ ৮১ টি বিল চিহ্নিত করার পর রোগীকল্যাণ সমিতির সদস্যদের চক্ষু চড়কগাছ। ভাড়ার গাড়ি, সবুজায়নের জন্য গাছ, বিরিয়ানি (biriyani), আসবাব, ওষুধ (medicine) সহ ইলেকট্রনিক যন্ত্রের বহু বিলের কোনও সারবত্তা নেই বলে দাবি করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবারের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে এই ভুয়ো বিল জমাকারী অভিযুক্ত ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কিংশুক ঘোষ নামে অভিযুক্ত এক ঠিকাদার বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে বলে সাফাই দেন। ভুয়ো নথির বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও, পুষ্পেন্দু মাঝি নামে অন্য এক ঠিকাদার বিরিয়ানির তিন লক্ষ টাকার বিল জমা দেওয়ার কথা স্বীকার করে নেন। তিনি জানান, বিল যদি ভুয়ো হয়, তাহলে কাটোয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিলে "ওয়ার্ক ডান" করেছে কেন? হাসপাতাল সুপার কোটি টাকার ভুয়ো বিলের কথা স্বীকার করে বলেন, প্রশাসনিক তদন্তের পর যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হয়, তাহলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে।
২৮০ শয্যার কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের উপর পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া (katwa) মহকুমা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী নদিয়া (nadia), বীরভূম (birbhum) ও মুর্শিদাবাদ (mursidabad) জেলার বাসিন্দারা নির্ভরশীল। স্বাভাবিক কারণে অন্তর্বিভাগ ও বহির্বিভাগে রোগীর চাপ সর্বক্ষণ লেগেই থাকে। হাসপাতালের বিভিন্ন কাজে সরকারি নিয়মে ঠিকাদাররা দরপত্র অনুসারে সংশ্লিষ্ট দফতরে নিজেদের বিল জমা করে প্রাপ্য টাকা তুলে নেন। ২০১৯-২০২০ সালে আর্থিক বছরের শেষ দিক থেকে ঠিকাদারদের প্রাপ্য বিল পেতে সমস্যা শুরু হয়। ঠিকাদারদের জমা করা বিলের সঙ্গে দরপত্রের কোনও সম্পর্ক নেই, এরকম বিল স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের নজরে পড়লে সেগুলি আটকে দেওয়া হয়।
এরপর প্রায় দুবছর বিলগুলির পেমেন্ট আটকে রাখা হয়। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে তৎকালীন সুপারের নেতৃত্ব যাচাই কমিটি গঠন করা হয়। বিলগুলি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের যাচাই কমিটি তিন ঠিকাদারের বকেয়া বিল পরীক্ষা করতে গিয়ে ভুরি ভুরি ভুয়ো নথি সহ অসংগতি ধরে। মোট ৮২ টি বিলে এক কোটি টাকার উপর দাবি করে ভুয়ো নথি জমা করা হয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে। এরকমভাবে ভুয়ো নথি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার বকেয়া বিলের টাকা দাবি করা হয়েছে।