Share this link via
Or copy link
বারুইপুরে (Baruipur Murder) প্রাক্তন নৌ সেনাকর্মী (Ex Navy Man) হত্যায় চাঞ্চল্যকর তথ্য পুলিসের হাতে। জানা গিয়েছে, ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যা নাগাদ খুন করা হয়েছিল উজ্জ্বল চক্রবর্তীকে। তারপর রাত বাড়লে কাঠ কাটার করাত দিয়ে খণ্ডিত করা হয় দেহ (Chopped Body)। এরপর রাতে চলে এলাকার বিভিন্ন জঙ্গল, পানাপুকুরে দেহাংশ ফেলার কাজ। দেহাংশ লোপাটে ছেলেকে সাহায্য করেছিলেন তাঁর মা শ্যামলী চক্রবর্তী। মাকে সাইকেল চাপিয়ে বাবার দেহাংশ ফেলতে গিয়েছিলেন নিহত প্রাক্তন নৌ সেনাকর্মীর ছেলে। এমনটাই প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে।
এরপরেই ১৫ তারিখ ভোরে বারুইপুর থানায় গিয়ে উজ্জ্বল চক্রবর্তীর নিখোঁজ ডায়রি করেন মা-ছেলে। সূত্রের খবর, পুলিসকে ভুল পথে চালিত করতেই থানায় এসেছিলেন দু'জন। যদিও দেহাংশ উদ্ধারের একদিনের মাথায় দফায় দফায় জেরার পর খুনের কথা স্বীকার করলে গ্রেফতার করা হয় উজ্জ্বল চক্রবর্তীর স্ত্রী এবং ছেলেকে। জানা গিয়েছে, নিত্য শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের বহিঃপ্রকাশ এই খুন। এমনটাই জেরায় পুলিসকে জানিয়েছে শ্যামলী এবং তাঁর ছেলে। এদিকে, ৩০২ এবং ২০১ এই দুই ধারায় মামলা রুজু হয়েছে ধৃতদের বিরুদ্ধে।
পাশাপাশি খুনের দিন পরীক্ষা ফি বাবদ ৩ হাজার টাকা বাবার থেকে চেয়েও পাননি ছেলে। এই নিয়ে শুরু হয় বচসা। তারপরেই বুকে উঠে শ্বাসরোধ করে প্রাক্তন নৌ সেনাকর্মীকে গলা টিপে খুন করে ছেলে। এমনকি, খুনের সময় চিৎকার করছিলেন উজ্জ্বলবাবু, সেই চিৎকার যাতে বাইরে না যায় চালিয়ে দেওয়া হয়েছিল টিভি। এমনটাই প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিস। এরপরেই তাঁদের মাথায় আসে দিল্লি শ্রদ্ধা ওয়াকার হত্যাকাণ্ড। তারপরেই দেহ খণ্ডিত করতে বাথরুমে উজ্জ্বল চক্রবর্তীর নিথর দেহ নিয়ে যায় মা-ছেলে।
দিন কয়েক আগেই এই বাড়িতে কাজ করে গিয়েছেন কাঠের মিস্ত্রিরা। সেই সময় তাঁরা রেখে গিয়েছিলেন একটি করাত। সেই করাত দিয়েই দেহকে ছয় টুকরো করে রাত বাড়লে দেহাংশ লোপাটে বেড়িয়েছিল মা-ছেলে। ঝোপে, জঙ্গলে পুকুরে ফেলা হয় দেহাংশ। রবিবার সকালে ছেলে রাজু চক্রবর্তীকে নিয়ে বারুইপুর থানার পুলিস দেহাংশ খুঁজতে আসেন। এই তল্লাশি অভিযানে উপস্থিত ছিলেন বারুইপুর থানার আইসি।
জানা গিয়েছে, এক পুকুরে ফেলা হয়েছে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র করাত। সেই অস্ত্র খুঁজতেও তল্লাশি চলে। তার ৫০ মিটার দূরেই এক ঝোপ-জঙ্গলে তল্লাশি অভিযান চলে উজ্জ্বল চক্রবর্তীর দেহের বাকি অংশের খোঁজে। ছেলে রাজুর দেখানো জায়গা থেকে উদ্ধার দেহের নিম্নাংশ। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র করাতের খোঁজেও চলেছে তল্লাশি। পাশাপাশি এদিনই মা-ছেলেকে তোলা হয়েছিল আদালতে। ১২ দিনের পুলিস হেফাজত মিলেছে, ৪৮ ঘণ্টা অন্তর মেডিক্যাল চেকআপের নির্দেশ আদালতের। এমনকি কোনও রকম শারীরিক নিগ্রহ করতে পারবে না পুলিস। এদিন স্পষ্ট করে দিয়েছে আদালত।