তপন কান্দু খুনের ঘটনায় বিপক্ষে থাকা তাঁর ভাইপো দীপক কান্দুকে জেরা ও গ্রেফতারের পর, এবার আরেক ভাইপো মিঠুন কান্দুকে জিজ্ঞাসাবাদ পুলিসের। পুরুলিয়া মফসসল থানায় মিঠুন কান্দুকে ডেকে পাঠায় পুলিস। তপন কান্দু খুনের ঘটনায় জল এভাবেই ক্রমশ ঘোলা হচ্ছে।
এছাড়া আরও তিনজন তৃণমূল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রবিবার ডেকে পাঠানো হয়। তাঁরা হলেন শ্যামা কান্দু, ভীম তেওয়ারি ও গুড্ডু মিশ্রা। আটক করা তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে মিঠুন কান্দুকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। কোন দিকে ঘটনা মোড় নিচ্ছে, সেই বিষয়ে এখনও পুলিস কিছুই বলতে নারাজ। তবে বেরিয়ে এসে মিঠুন কান্দু জানান --
প্রসঙ্গত, ঝালদায় কাউন্সিলর খুনে প্রথম থেকেই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইঙ্গিত মিলছিল।
গত ১৩ মার্চ আততায়ীদের গুলিতে মৃত্যু হয় পুরুলিয়ার ঝালদার সদ্য জয়ী কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর। পরের দিন ভাইপো দীপক কান্দু ও দাদা নরেন কান্দুকে জেরা করে পুলিস। সেদিনই আরেক ভাইপো মিঠুন কান্দুর সঙ্গে ঝালদা থানার আইসির কথোপকথন প্রকাশ পায়।
এরপরই তপন কান্দু খুনে গ্রেফতার করা হয় ভাইপো তথা তৃণমূলের পরাজিত প্রার্থী দীপক কান্দুকে। এদিনই পুলিস সুপারের উদ্দেশে লেখা নিহত কাউন্সিলরের স্ত্রীর চিঠিতে অভিযুক্ত হিসেবে নাম উঠে আসে দীপক কান্দু, নরেন কান্দু কিছু তৃণমূল ঘনিষ্ঠ সহ ঝালদা থানার আইসি সঞ্জীব ঘোষের। ঘটনার তদন্তভার যায় সিটের হাতে। তবে তপন কান্দুর পরিবারের দাবি সিবিআই তদন্তের।
১৭ মার্চ প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে আততায়ীর স্কেচ প্রকাশ করা হয় পুরুলিয়া জেলা পুলিসের পোর্ট্রেট বিশেষজ্ঞের তরফে। পরের দিন অর্থাত্ ১৮ মার্চ দোলের দিন নিহত তপন কান্দুর ভাইপো মিঠুন কান্দুর মোবাইল নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিস। সেখান থেকেই প্রকাশ্যে আসে মিঠুন কান্দু এবং আইসির আরও এক কথোপকথন। সামনে আসে বিস্ফোরক কিছু তথ্য। অডিওতে শোনা যায় তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দুর অভিযোগপত্র থেকে নিজের নাম সরানোর জন্য মিঠুন কান্দুকে অনুরোধ করছেন ঝালদা থানার আইসি।
তদন্তের স্বার্থে ২টি ফরেন্সিক দল পৌঁছয় ঝালদায়। এদিকে, তদন্তে গাফিলতির অভিযোগে ৫ জন পুলিসকর্মীকে ক্লোজ করে জেলা পুলিস। তারপর এদিন ভাইপো মিঠুন কান্দুকে ডেকে পাঠাল পুরুলিয়া মফঃস্বল থানার পুলিস। এখন তদন্তের গতিপ্রকৃতির দিকে তাকিয়ে গোটা পুরুলিয়াবাসী।