করোনা আবহের মাঝেই এবার উত্তরে আরও চিন্তা বাড়াচ্ছে নাইরোবি ফ্লাই বা অ্যাসিড ফ্লাই। ইতিমধ্যে এই মাছির হানায় জখম হয়েছেন একাধিক মানুষ। ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে শহর শিলিগুড়ি সহ ফাঁসিদেওয়া, দার্জিলিং জেলাগুলিতেও। যদিও এতে আতঙ্কের কিছু নেই বলেই মন্তব্য করেছেন চিকিৎসকরা। তবুও চিন্তায় উত্তরবঙ্গবাসী। ফাঁসিদেওয়ায় ইতিমধ্যেই ৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছে এক ১২ বছরের শিশুও। তবে তাঁরা আপাতত সুস্থ রয়েছেন। তবে শিশুটি জানায়, হঠাত্ করেই তার বুকে পিঠে জ্বালা অনুভব হয়। বাড়ির সদস্যদের বিষয়টি নজরে আসতেই গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে শিশুটি ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছে।
অন্যদিকে শিলিগুড়িতেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে এই অ্যাসিড পোকা। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, ফের মাথা চাড়া দিচ্ছে করোনা ভাইরাস। এরই মধ্যে আবার এই অ্যাসিড পোকার হামলায় খুবই ভীত তাঁরা।
কিন্তু কী এই নাইরোবি বা অ্যাসিড ফ্লাই? কেনই বা উত্তরবঙ্গেই প্রভাব পড়ছে এর?
মূলত, নাইরোবি ফ্লাই বা অ্যাসিড ফ্লাই ভিনদেশী একটি পতঙ্গ। যা কমলা, লালা এবং কালো রঙের ডোরাকাটা হয়। এর লালা বা শরীরে পেডিটিন নামক একটি অ্যাসিড থাকে। বৃষ্টিপ্রবণ এলাকায় ওই পতঙ্গর বসবাস হয়ে থাকে। কয়েক দশক যাবৎ এদেশে পতঙ্গের দেখা মিলছে। তবে উত্তরে বিশেষত হিমালয় পাদদেশে বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হওয়ার কারণে ওই পতঙ্গের বসবাস রয়েছে। এই বছর বৃষ্টি অন্যান্য বছরের তূলনায় বেশি হওয়ায়, তাদের বংশ অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যে কারণে একের পর এক মানুষ ওই পতঙ্গের দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছেন। এই পতঙ্গটি সচরাচর কামড়ায় না। তবে মানুষের শরীরে বসার পর পতঙ্গটিকে মারলে তার শরীর থেকে অ্যাসিড বেরোয় আর সেটিই ত্বকে ক্ষতের সৃষ্টি করে।
জানা গিয়েছে, আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে প্রথম ক্ষতের সৃষ্টি হবে। সেখানে ব্যাপক জ্বালা হবে। পরে শুরু হবে ব্যাথা। অনেক সময় ফোসকাও পড়তে পারে। আসতে পারে জ্বর। হতে পারে বমিও। এমন উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। যদিও আতঙ্কের কিছু নেই বলেই মনে করা হচ্ছে। চিকিৎসকদের কথায়, উপযুক্ত ওষুধ সেবনে অতিদ্রুত সেরে ওঠা সম্ভব।