প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের নিজের, স্ত্রী, ছেলে এবং মেয়ের সম্পত্তির হিসাব চাইল হাইকোর্ট। ৫ জুলাইয়ের মধ্যে হলফনামা আকারে ওই হিসাব হাইকোর্টে দাখিল করতে হবে বলে নির্দেশ বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের। উল্লেখ্য, এদিন হাইকোর্টে হাজিরা এড়াতে মানিকবাবু ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু পদ্ধতিগত ত্রুটি থাকায় সেই আবেদন গ্রাহ্য হয়নি। বিষয়টি নিয়ে শুনানি হতে পারে কাল, বুধবার। তাই সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ মেনে এদিন হাইকোর্টে হাজিরা দেন তিনি। সেখানেই বিচারপতি জানতে চান, আপনি কি আপনার সম্পত্তির হিসাব, আপনার স্ত্রী, ছেলে, মেয়ের সম্পতির হিসাব দিতে পারবেন? আপনি এই হলফনামা দেওয়ার পরে আর্ কোনও সম্পত্তি ভবিষ্যতে কিনতে পারবেন না। মনে থাকবে? মানিকবাবু উত্তরে বলেন, অবশ্যই। আমি একজন শিক্ষক। আমি এটা মেনে চলব। আমি ভুল করলে শাস্তি পাব।
বিচারপতি প্রশ্ন করেন, আপনার মনে আছে, আপনি কোনও দ্বিতীয় প্যানেল বের করেছিলেন? উত্তরে মানিকবাবু বলেন, আমার জানা আছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অধীনে প্রথম প্যানেল বের হয় যারা টেট পাশ করে, তাদের নিয়ে। পরে আরও একটা প্যানেল হয় যারা ট্রেন্ড নয়, তাদের নিয়ে। ওটা দ্বিতীয় প্যানেল। উর্দু, তেলেগু, অলচিকি, মারাঠি, হিন্দি প্যানেলও বের করি এর পর পর।
এরপর বিচারপতি জানতে চান, দ্বিতীয় নিয়োগ তালিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে কোনও আইনি সংস্থান আছে? মানিকবাবু জানান, সংশ্লিষ্ট রুল মেনেই প্রশিক্ষিত প্রাথীদের নিয়োগ করা হয়েছে। শিক্ষার অধিকার আইনে দ্বিতীয় নিয়োগের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
এসব ছাড়াও বিচারপতির নানা প্রশ্নের উত্তরে মানিকবাবু যা যা জানিয়েছেন, তা হল এইরকম।
মানিকবাবুর জন্মতারিখ ৭.৫.৫৪। বয়স ৬৬ বছর। উচ্চ মাধ্যমিকের পর বি-কম। তারপর কলকাতা বিসেবিদ্যালয় থেকে এম-কম করেন। তারপর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি। ১৯৮১ সাল থেকে কলেজে পড়ান। সুরেন্দ্রনাথ ইভিনিং কলেজ ও বিজয়গড় বিদ্যাপীঠে পড়াতেন। এখন যাদবপুরে থাকেন। তাঁর আদি বাড়ি নদীয়ার কালিগঞ্জে।
মানিকবাবুর পরিবারে আছে স্ত্রী, ছেলে, ছেলের বউ। উনার স্ত্রী হাউস-ওয়াইফ। মেয়ের বিয়ে হয় কবে মনে নেই, তবে দু-তিন বছর আগে। ছেলে সিইএসসি-তে চাকরি করত।এখন সরকারি ওয়ার হাউজিংয়ে চাকরি করে। ছেলের বউ গাইনোকলজি স্পেশালিস্ট, ডাক্তার নয়।
সম্পত্তির ব্যাপারে মানিকবাবু বলেন, আমার পৈতৃক সম্পত্তি আছে। আর্ আমার প্রথম ফ্ল্যাট, যেখানে আমি থাকি। নয়াবাদ এলাকায় আরও একটা ফ্ল্যাট আছে (1985/86)।
আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি। আমি ভারতে আর্ কোনও সম্পত্তির মালিক নই। আমার পরিবারের লোকেরও নেই। আপনার স্ত্রীর কত সোনা আছে? বিচারপতির এই প্রশ্নে মানিকবাবু বলেন, ওটা স্ত্রীর কাছে আছে, আমি জানি না। আমি মাঝে মাঝে ওকে গিফট করেছি।
৫ জুলাই দুপুর দুটোয় মামলার পরবর্তী শুনানি।