প্রসূন গুপ্ত: আরও একটা বিশ্বকাপ এসে গেল। ফুটবল বিশ্বকাপ চিরকাল মে থেকে জুলাই মাসের মধ্যে হত। কিন্তু এবার মধ্যপ্রাচ্যে খেলা, দায়িত্বে কাতার। এশিয়ার এই দেশ গ্রীষ্মপ্রধান। মে-জুন জুলাইতে প্রচণ্ড গরম থাকে, তাই খেলা পড়েছে নভেম্বর-ডিসেম্বরে। ওই সময়ে গরম অনেকটা কম থাকে। নিয়মানুযায়ী এশিয়া, ইউরোপ, লাতিন আমেরিকা, উত্তর আমেরিকা, অস্ট্রেলেশিয়া ইত্যাদি মহাদেশ থেকে ৩২টি দল চূড়ান্ত পর্যায়ে খেলে। যুগ যুগ ধরে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি এবং ইতালি চূড়ান্ত পর্বে চিরকাল খেলে এসেছে, অবশ্যই যোগ্যতা অনুযায়ী। এর মধ্যে ব্রাজিল ৫ বার জার্মানি ও ইতালি ৪ বার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কিন্তু ব্যতিক্রম ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালি এবারে চূড়ান্ত পর্বে খেলছে না। ২০১৮-র রাশিয়া বিশ্বকাপের মতোই এবারও তারা যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি।
এবার লক্ষ টাকার প্রশ্ন, লাতিন আমেরিকার দলগুলি কী করবে? শেষবারের মতো এই উপমহাদেশের ব্রাজিল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ২০০২ জাপান বিশ্বকাপে। কিন্তু তারপর থেকেই তারা হারিয়ে গিয়েছে, সবুজ গালিচাজুড়ে নেই সাম্বার ছন্দ। শেষবার, ২০১৪ সালে ফাইনাল যেতে পেরেছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু লড়েও ফাইনালে তারা জার্মানির কাছে পরাজিত হয়েছিল। অথচ এই লাতিন আমেরিকান ফুটবল দেখতেই টিভির সামনে ভিড় জমায় ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের দর্শকরা। বিশ্বে এই দর্শক সংখ্যাই সব থেকে বেশি এবং এই দর্শকদের দিকে তাকিয়ে বিশ্বকাপ কর্তারা খেলার সময় ধার্য করে।
গতবারের বিশ্বকাপের ফাইনাল হয়েছিল মস্কোতে, ভারতীয় দর্শকদের কথা মাথায় রেখে রাশিয়া ফাইনালের সময় রেখেছিল তাদের ঘড়ি অনুযায়ী বিকেল ৪.০৫ এ। অর্থাৎ ভারতীয় সময় তখন রাত ৮.৩০। এবারেও বড় খেলা সবই রাত ৮.৩০ -এ। সেসব ঠিক আছে, কিন্তু ভারতীয়রা খেলা দেখতে বসে লাতিন আমেরিকার ফুটবলের শিল্পের ছোঁয়া কি এবার দেখতে পারবে ফুটবল বিশ্ব? সেই খেলা দেখানোর দায়িত্ব এখন মেসিদের উপরেই বর্তায় কি?