Share this link via
Or copy link
প্রসূন গুপ্ত: হাওয়ায় ভাসছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় আরও ক্ষমতায় থাকার সুযোগ পেলেও তিনি কি ২০২৫ পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি থাকতে পারবেন? বৃহস্পতিবার সিএন পোর্টালে লেখা হয়েছিল, সৌরভ নয় বিসিসিআই সভাপতি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা জয় শাহর। অন্য জাতীয় সংবাদ মাধ্যমও সেই দাবি করছে।
তবে ক্রীড়া প্রশাসকের রাজনীতি কখনই প্রত্যক্ষ রাজনীতিমুক্ত নয়। সবাই জানে বিসিসিআই বা এআইএফএফ স্বসাশিত সংস্থা। শাসক দল চেষ্টা করে নানাভাবে ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক এবং সামাজিক দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত স্বশাসিত সংস্থাগুলোয় ক্ষমতা বিস্তার করা। কেন্দ্রে যখন ইউপিএ সরকার তখনও বিসিসিআই, এআইএফএফ কিংবা আইওসি-র মতো সংস্থায় প্রধান শাসক দল কংগ্রেসের পছন্দের লোক বসানো হয়েছিল। সে সুরেশ কালমাডি হোক, শরদ পাওয়ার কিংবা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি হোক। এই রীতির ব্যতিক্রম ছিল না বাংলার পূর্বতন বাম জমানা।
আমরা দেখেছি, বামফ্রন্ট বিশেষ করে সিপিএম রাজ্যের শাসনভার নিয়ন্ত্রণের সঙ্গেই ক্লাব, লাইব্রেরি, ক্রীড়া, সিনেমা জগৎ থেকে শুরু করে সামাজিক সব জায়গাতেই তাদের দলের লোককে বকলমে বসিয়েছিল। সেই একই পথে কি হাঁটছে বিজেপি? সম্প্রতি ফুটবল, হকি ইত্যাদি সব জায়গাতেই তাদের কাছের লোক জায়গা পেয়েছে। তাহলে ক্রিকেট কেন ব্যতিক্রম হবে? বিসিসিআই শীর্ষ পদে জয় শাহের উত্তরণ সম্ভাবনা জোরালো করে এই প্রশ্ন ভাবাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের।
জয় শাহ এখনই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষপদ না পেলে তাঁকে অপেক্ষা করতে হবে ২০২৮ অবধি। তাই কি এবারেই সৌরভকে সরিয়ে জয় শাহকে বিসিসিআই সভাপতি করতে ঝাঁপাবে গেরুয়া শিবির?
যদি তাই হয়, তাহলে সৌরভ গাঙ্গুলির ভবিষ্যৎ কী? সৌরভ হয়তো চাইতে পারেন আইসিসির সভাপতি হতে, কিন্তু সেখানেও হার্ডল। দাবিদার অনেক, বিশ্ব ক্রিকেট সংস্থার বর্তমান সভাপতি আরও দু'বছর মেয়াদবৃদ্ধি চেয়েছেন। হয়তো পেয়েও যাবেন, এছাড়া চেন্নাই ক্রিকেট বোর্ড চাইছে তাঁদের প্রতিনিধি আইসিসি সভাপতি হোক। শোনা যাচ্ছে বর্তমান সে রাজ্যের শাসক দল এবিষয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে একপ্রস্থ কথা বলে রেখেছে।
তাহলে সৌরভের হয়ে গলা ফাটাবে কে? সম্ভবত আইসিসি-র শীর্ষপদে যাওয়ার কাজ এখন কঠিন তাঁর পক্ষে। সেক্ষেত্রে তিনি কি ক্রীড়া ভাষ্যকার হয়ে ফিরবেন? সেখানেও বাধা, স্বার্থের সংঘাতে ভুগবেন তিনি। তাহলে রাস্তা খোলা একমাত্র রাজনীতিবিদ হওয়ার। অমিত শাহ তাঁর বাড়িতে যাওয়ার পর এই জল্পনা মাথাচাড়া দিয়েছিল। কিন্তু কোনওপক্ষ থেকেই উত্তর আসেনি। সৌরভ ভোটে দাঁড়াতে চাইবেন না। সম্প্রতি ইউনেস্কোর অনুষ্ঠানে একেবারে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে মহারাজকে দেখা গিয়েছে। তাই নিরাপদ ভাবে জিততে রাজ্যসভা তাঁর জন্য আদর্শ। প্রশ্ন এ রাজ্য থেকে কি তিনি রাজ্যসভায় যাবেন বিজেপির সমর্থনে?
এমনও হতে পারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদধন্য হিসেবে তিনি তৃণমূলের সাংসদ হতে পারেন। কারণ যাই হোক না বাংলার মহারাজ লম্বা রেসের ঘোড়া এবং ক্যালকুলেটিভ। তাই সময় সুযোগ বেছে সেরাটাই বাছবেন প্রিন্স অফ ক্যালকাটা, এমনটাই ধারণা দাদা অনুরাগীদের।