যুগ যুগ ধরে বাংলার ক্রিকেটারদের ভারতীয় দলে সুযোগ মেলেনি। দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখা গেলেও তাদের ইন্ডিয়ান ক্যাপ পরার সুযোগ হয়নি। সুটে ব্যানার্জি থেকে আজকের ঋদ্ধিমান সাহা, সুযোগ কেউ পেয়েছেন, কেউ পাননি। সুযোগ পেয়েও নানান অজুহাতে বাদ পড়েছেন ভারতীয় দল থেকে। ৬০ এর দশকে প্রকাশ পোদ্দার ও শ্যামসুন্দর মিত্র ব্যাটিংয়ে দুর্দান্ত ফল করেছিলেন রঞ্জি এবং দলীপ ট্রফিতে। কিন্তু সুযোগ হয়নি ভারতের হয়ে খেলার। চিরকালই নির্বাচন কমিটি ছিল, ভারতের পাঁচ প্রান্তের পাঁচ নির্বাচক থাকতেন, তাঁরাই দল গঠন করতেন।
মজার বিষয়, নির্বাচন কমিটিতে থাকতে গেলে প্রাক্তন ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটার হওয়া দরকার। কিন্তু এমন মানুষ প্রয়াত পঙ্কজ রায় ছাড়া কেউ ছিলেন না। কাজেই পূর্বাঞ্চলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতেন মুম্বইয়ের কেউ। স্বাভাবিকভাবে তাঁরা কেউই বাংলার ক্রিকেটারদের পাত্তা দিতেন না। অবশেষে জগমোহন ডালমিয়ার মতো অবাঙালি হয়েও আদ্যন্ত বাঙালি ক্রিকেট বোর্ডের মাথায় বসার সুযোগ পেয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি। এতটাই সুযোগ হয়েছিল যে একসময় তিনি ভারতের অধিনায়ক হন। সৌরভের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নই ওঠে না। ডালমিয়ার আমলে দীপ দাশগুপ্ত সহ আধা ডজন বাঙালি কখনও না কখনও কোনওভাবে ইন্ডিয়ান ক্যাপ পরতে পেরেছিলেন। জগুবাবুও গিয়েছেন, বঙ্গ ক্রিকেটেরও দশা শেষ হয়েছে। সবশেষে সুযোগ এসেছিল শিলিগুড়ির ঋদ্ধিমানের, তাঁকেও রাজনীতির শিকার হতে হয়েছে বলেই ধারণা ক্রিকেটপ্রেমী বাঙালির।
ভারতীয় দল থেকে বাতিল তো আগেই হয়েছেন। এবার বাংলা দলের সঙ্গেও বিবাদ ঘটেছে ঋদ্ধির। বাংলার হয়ে আর খেলতেই চাইছেন না তিনি। বর্তমানে আইপিএলের হয়ে ইডেনে খেলতে এসেছেন তিনি। কলকাতার কোনও দলের হয়ে নয়, খেলছেন টুর্নামেন্টের শীর্ষে থাকা গুজরাত টাইটনসের হয়ে। এবার তাঁর খেলা দেখে আপ্লুত প্রাক্তন বহু খেলোয়াড়, ওপেন করছেন দলের হয়ে এবং নিয়মিত রান পাচ্ছেন। সচিন জানিয়েছেন, ঋদ্ধির মধ্যে এখনও খেলা আছে, অথচ তাঁর কথা বিন্দুমাত্র ভাবেননি বা ভাবতে নারাজ সৌরভ গাঙ্গুলির ভারতীয় বোর্ড। প্রশ্নের তির কিন্তু সৌরভের দিকেই।