প্রসূন গুপ্ত: শুক্রবার উচ্চমাধ্যমিকের ফল ঘোষণা হল। পাশের হার ৮৮ শতাংশের বেশি। এবার প্রশ্ন উঠতেই পারে এরা কোথায় পড়বে, কী বিষয় নিয়ে পড়বে? এই সুবিশাল পাশ করা ছাত্রছাত্রীরা নিশ্চিত কলেজেই ভর্তি হবে কিন্তু পছন্দের বিষয় পাবে কি? একটা সময়ে বিজ্ঞান নিয়ে পড়া পড়ুয়ারা সাধারণত ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ে ভবিষ্যৎ গড়ার পথে যেত। কিন্তু আজকের ছাত্রছাত্রীদের কারিগরিবিদ্যা অধ্যায়ন করার আগ্রহ কমেছে। বরং চিকিৎস্যা শাস্ত্রের দিকে ঝোঁক তাদের। সকলেই তো আর ডাক্তার হতে পারবে না। ফলে বিজ্ঞানের নানান শাখায় তাদের ভর্তি হওয়ার আগ্রহ বাড়ছে।
এই ভবিষ্যৎ গড়ার আগে ছাত্রছাত্রীদের একটি বিষয় ভাবা দরকার যে আগামীদিনে টেকনিক্যাল বা ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত পড়াশোনা করা বাঞ্ছনীয়। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে, স্কিল্ড কর্মীরাই দেশ গড়বে এবং তার জন্য যতটুকু পাঠ্যক্রম দরকার আগামীতে সেটাই থাকবে।
এবার এই স্কিল কর্মীর যোগ্যতা কী ? অবশ্যই কারিগরি শিক্ষায় যেতেই হবে, সেটি যে শুধুমাত্র বি-টেক এমন নয়। আজকাল অনেক বিষয় এসে গিয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের বাবা-মায়েরা তার খবর কতটুকু রাখেন? শহর কলকাতায় এই বিষয় সচেতনতা থাকলেও , মফস্বল বা গ্রামে এই বার্তা গিয়েছে কী?
সরকারি চাকরির খোঁজে ৮০ শতাংশ পড়ুয়া। কিন্তু ভবিষ্যতে চাকরি পাবে হয়তো তাদের মধ্যে ৫ শতাংশ, বাকিদের কী হবে? কেন্দ্রীয় সরকার ধীরে ধীরে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি বিক্রি করে দিচ্ছে। তাদের মতে শিল্প বাণিজ্য বা ব্যবসা করা সরকারের কাজ নয়। এসব বেসরকারি সংস্থার হাতে থাকা বাঞ্ছনীয়। এভাবে রেল, ভেল, কোল ইত্যাদি বিক্রির পথে। হয়তো আগামীতে ব্যাঙ্কিং সেক্টরগুলিও বেসরকারি হয়ে যাবে। অন্যদিকে রাজ্য সরকার কতদিন আর স্কুল কলেজে বা বিভিন্ন অলাভজনক সংস্থার দায়িত্ব পালন করবে?
পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের বাবা মায়েদের ভাবার পালা যে সরকারি চাকরিকে টার্গেট করে সন্তানদের শিক্ষার দিক তৈরি করা কতটা উচিত হবে। পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের এবারে এই বাংলার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কী কী পড়া যেতে পারে, সে বিষয় নিয়ে বিশেষজ্ঞাদের সাথে আলোচনা করে উচ্চমাধ্যমিক পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।