Share this link via
Or copy link
সৌমেন সুর: সব ধর্মই সত্য। সব পথ দিয়েই তাঁকে পাওয়া যায়। আসলে ছাদে ওঠা নিয়ে কথা। তা তুমি সিঁড়ি দিয়ে উঠতে পারো, আবার কাঠের সিঁড়ি দিয়ে উঠতে পারো। মই দিয়ে উঠতে পারো, দড়ি বেয়ে উঠতে পারো। ওঠার জন্য ব্যাকুলতা থাকলেই হল। তার উদ্দেশ্যে ফুল ফেলছে কেউ গড বলে, কেউ আল্লাহ বলে, কেউ ঈশ্বর বলে। কিন্তু সব ফুল গিয়ে পড়ছে এক জায়গাতেই। কেউ বলছে জল, কেউ বলছে পানি, কেউ বলছে ওয়াটার। পুকুরের জল সকলেরই তৃষ্ণা দূর করে।
আমরা সকল ধর্মকে যেমন শ্রদ্ধা করি, তেমনি সত্য বলেও মানি। বিবেকানন্দ বলছেন যে, জাতি পৃথিবীর সকল ধর্মের ও সকল জাতির নিপীড়িত ও আশ্রয়প্রার্থী জনগণকে চিরকাল আশ্রয় দিয়ে এসেছে। আমি সেই জাতির অন্তর্ভুক্ত বলে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করি।
আমরা জানি সকল ধর্মই অসীমকে উপলব্ধি ও অনুভব করার বিভিন্ন চেষ্টা মাত্র। স্বামীজি স্বপ্ন দেখতেন এমন একদিন আসবে যখন পৃথিবীতে কোন জাতি থাকবে না। এই বদ্ধ জলার মত গতিহীন ধর্মহীন দেশে স্বামীজীর মতো একজন মহা মানুষের পুন আবির্ভাব বড় বেশি প্রয়োজন ছিল। কারণ রাজনীতির ক্ষুদ্র স্বার্থে ধর্ম বিদীর্ণ হচ্ছে। ভাতৃঘাতী যুদ্ধে দেশে দেশে রক্ত ঝরছে বলে মনে হয়।
ধর্ম সম্পর্কে স্বামীজীর বক্তব্য, এক ব্যক্তি সারা জীবনেও একটা দর্শন শাস্ত্র পাঠ করেননি, তিনি হয়তো সারা জীবন একবারও ঈশ্বরের কাছে কোনও প্রার্থনা জানাননি। কিন্তু যদি কেবল সৎ কর্মের শক্তি তাকে এমন অবস্থায় নিয়ে যায়, যেখানে তিনি পরার্থের তার জীবন ও যা কিছু আছে সব ত্যাগ করতে উদ্যত হন, তাহলে বুঝতে হবে জ্ঞানী জ্ঞানের দ্বারা এবং ভক্ত উপাসনার দ্বারা সে অবস্থায় উপনীত হয়েছেন, তিনিও সেখানেই পৌঁছেছেন। অজ্ঞরাই কর্ম ও জ্ঞানকে পৃথক বলে থাকে, কিন্তু জ্ঞানীরা জানেন শেষ পর্যন্ত এই দুই পথ মানুষকে পূর্ণতা রূপ এক লক্ষ্যে পৌঁছে দেয়।