ব্রেকিং নিউজ
Handicapped family পরিবারকে বাঁচাতে হুইল চেয়ারে করেই অসম লড়াই
Post By : সিএন ওয়েবডেস্ক
Posted on :2022-01-16 08:35:25
এক পরিবারের তিন সন্তান বিশেষভাবে সক্ষম। সম্পূর্ণ বিকলাঙ্গ দুই ভাই, এক বোন এবং অসুস্থ বাবা-মাকে নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করছেন কলকাতা পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মিলন দাস। এঁদের খেটে উপার্জন করার কোনও ক্ষমতাই নেই। শুধু তিন ভাইবোনের প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা দিয়ে সংসার চালানো এবং বাবামায়ের চিকিৎসা করছেন ৩৫ বছরের এই যুবক। অসহায় এই পরিবারটির পাশে নেই কেউ। সরকারি সাহায্যের মুখ চেয়েই কেটে যাচ্ছে জীবন।a
৯ নম্বর ওয়ার্ডের ১২ হরচন্দ্র মল্লিক স্ট্রিটের বাসিন্দা দাস পরিবার। মিলনরা আসলে চার ভাইবোন। পরিবারের বড় সন্তান সুস্থ সবল। বাকি তিন ভাই বিশেষভাবে সক্ষম। বাবা প্যারালিসিস রোগী। মা ক্যান্সারে আক্রান্ত। এই অবস্থায় ভাই, বোন. বাবামায়ের পাশে না দাঁড়িয়ে বিয়ের পর সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে যান বড় ছেলে। অসহায় হয়ে বেঁচে থাকার লড়াই শুরু করেন মিলন দাস। হুইল চেয়ারে করে ভাই, বোন ও বাবামায়ের জন্য অর্থ উপার্জনের লক্ষ্যে ঘুরে বেড়াতে থাকেন। কিন্তু শরীরী প্রতিবন্ধকতা বার বার হার মানিয়েছে। এই অবস্থায় অসহায় পরিবারের সেবা করার জন্য মিলনের হাত ধরে ওড়িশার অন্নপূর্ণা দাস। বিয়ে করেন মিলন দাসকে।
বাড়ির বৌমা সুস্থ, সবল এবং শিক্ষিতা। টিউশন পড়িয়ে সংসারের হাল ধরেছেন তিনি। কিন্তু শ্বশুর, শ্বাশুড়ির চিকিৎসার জন্য যে পরিমাণ খরচ, তা সামাল দেওয়া কার্যত অসম্ভব। তাই, পরিবারের সচ্ছলতা আনতে বৌমার জন্য একটা সরকারি চাকরির দাবি জানান তাঁরা। সেই দাবি নিয়ে নবান্ন থেকে কালীঘাট, মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও হুইল চেয়ার নিয়ে ছুটেছেন মিলন। কিন্তু সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। এমনকি বিধায়ক শশী পাঁজা জানেন এই পরিবারের কথা। কিন্তু অভিযোগ, সেখানেও মেলেনি তেমন সহযোগিতা। উল্টে বিধায়কের লোকেদের কাছে জুটেছে অপমান, প্রতিবন্ধী বলে ঠাট্টা মস্করা। যদিও কাউন্সিলর খোঁজ রাখেন এই পরিবারের। কিন্তু তাতে পরিবারের অসহায়তা কাটাতে প্রশাসনিক সহযোগিতা মেলেনি।
তবে কিছু মানুষের সহযোগিতায় প্রতিবন্ধী বোন কয়েক বছর আগে পেয়েছিলেন মাদার ডেয়ারি কাউন্টার। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে তাও বন্ধ হয়ে গেছে। ভাই তপন দাসের নামেও একটা মাদার ডেয়ারির কাউন্টার খোলার জন্য একটি জায়গা পেয়েছিলেন। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে তা চালু করতে পারেননি। হাঁটতে চলতে না পারলেও, বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করার অদম্য ইচ্ছে রয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেন না তাঁরা। বাধ্য হয়ে পরিবারের একমাত্র সুস্থ, শিক্ষিতা সদস্য বৌমার দিকে তাকিয়ে সকলেই। পরিবারের কথা ভেবে এগিয়ে আসবে কি সরকার।