প্রসূন গুপ্ত: শিক্ষা ক্ষেত্রের কেলেঙ্কারি এবং পরবর্তী নানা ঘটনায় তৃণমূলের সাধারণ কর্মীদের মধ্যে এক চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। চাকরির জন্য আন্দোলন দীর্ঘদিন ধরে চলছিল এবং আন্দোলনকারীরা যে সবাই বিরোধী রাজনীতি দলের এমন কোনও অর্থই নেই। বরং দীর্ঘদিনের তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটদাতাদের পুত্রকন্যদের অনেকেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর চাকরি জোটেনি। কাজেই বিষয়টি আম জনতার কাছে অতি স্পর্শকাতর বিষয়। এরই সঙ্গে টাকা দিয়ে ভর্তি হওয়ার ঘটনায় বিষয়টিকে কোর্ট এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের হাতে চলে যাওয়ার পর তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হয়েছেন। পাশাপাশি গ্রেফতার হয়েছে তাঁরই ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা। পাওয়া গিয়েছে স্তূপাকার টাকার বান্ডিল, প্রায় ২২ কোটি টাকা (২১ কোটি ৮০ লক্ষ)।
প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে পার্থবাবুর বিরুদ্ধে। আপাতত তিনি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হেফাজতে। মুখ্যমন্ত্রী বিস্তর চটেছেন এই ঘটনার প্রেক্ষিতে। ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন এক সরকারি অনুষ্ঠানে।ঘটনার গতিপ্রকৃতি কোনদিকে যায় সেদিকে নজর বাংলার জনতার। একইসঙ্গে এই ঘটনায় প্রবল ক্ষুব্ধ তৃণমূলের সাধারণ কর্মীরা। এঁরাই তাঁরা, যারা সারাবছর দলের হয়ে কোনও কিছু প্রত্যাশা ছাড়াই লড়াই করেন। এরাই করোনা, আমফান, ভোটযুদ্ধ কিংবা ২১ জুলাই দলের পাশে থাকে। তাঁদের আশা ভরসার কেন্দ্র মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। ওরা একসময়ে মদন মিত্র, সুদীপ বন্দ্যেপাধ্যায়, তাপস পাল কিংবা ইদানিং প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ববি হাকিম ইত্যাদিদের সিবিআই অথবা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতর হতে দেখেছিল। কিন্তু সেসবে মমতা ভক্তরা আমল দেয়নি। তারা বলেছিলো 'এসব ষড়যন্ত্র'। কিন্তু এবার বিষয়টি ভিন্ন। প্রথমত চাকরির মতো স্পর্শকাতর বিষয় দ্বিতীয়ত পার্থবাবুর সঙ্গিনীর বাড়ির থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার। অনেকেই বলছে ভীষণই অসম্মানিত হচ্ছি এলাকায়।
তাদের ইচ্ছা, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পার্থবাবুর বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নিক দল। কিন্তু প্রকাশ্যে মুখ খুলছে না কেউই। এদের অনেকেই বেকার অথবা অতি সাধারণ জীবন যাত্রা। তাদের বক্তব্য, 'আমরা খেটে মরবো আর যিনি কেলেঙ্কারিতে নাম ওঠার পরেও পদত্যাগ করছেন না।' বিষয়টি কিন্তু ভাববার। দল ভাবছে কি?