Share this link via
Or copy link
সৌমেন সুর: সমগ্র ভারতবাসীর কাছে আজও মহাভারত চিরায়ত সাহিত্য হিসেবে গণ্য। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ আধুনিকতম রচনা এই মহাভারত। কী নেই এই সাহিত্যে! জীবনের নীতিবোধ থেকে শুরু করে হিংসা, ঈর্ষা, লোভ, কাম, ক্রোধ প্রভৃতির শিল্প সম্মত ব্যবহার এবং অজস্র চরিত্র নিজের গুনে উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। রয়েছে অজস্র নারীর আখ্যান। যারা নানা বৈশিষ্ট্যে মানব মনে এখনও অমলিন।
শকুন্তলার কথা ধরা যাক। শকুন্তলার জন্ম মেনকার গর্ভে। ব্রহ্মর্ষি বিশ্বামিত্র একবার কঠিন কঠোর তপস্যা করাতে স্বর্গে ইন্দ্রের আশঙ্কা হয়, যদি বিশ্বামিত্রের কারণে তাঁর সিংহাসনচ্যুত হয়। তখন ইন্দ্র স্বর্গের মহা অপ্সরা মেনকাকে নিয়োগ করেন বিশ্বামিত্রের তপস্যা ভঙ্গের জন্য। মেনকা যথারীতি বিশ্বামিত্রের কাছে এসে এমন নৃত্য প্রদর্শন করেন যে তাঁর তপস্যা ভঙ্গ হয়। চোখের সামনে এমন অপরূপা নারীকে দেখে বিশ্বামিত্র মেনকার সঙ্গে আলিঙ্গনবদ্ধ হন এবং মেনকার গর্ভে শকুন্তলার জন্ম হয়।
এই শকুন্তলা ধীর, স্থির, নম্র স্বভাবের তপোবন দুহিতা। দুই প্রিয় সখী অনসূয়া, প্রিয়ংবদার সঙ্গে হাসিঠাট্টা, গান, খেলায় দিন কাটান। বনের পশু পাখিরা তাঁর অত্যন্ত প্রিয়। এক স্নেহশীলা কল্যাণী স্বরূপা রমণী। অথচ এই নারী পরিস্থিতির চাপে পড়ে কতখানি তেজস্বিনী হতে পারেন এবং নিজের অধিকার রক্ষার জন্য অপরের কাছে কতখানি অপ্রিয়ভাষিনী হতে পারেন, তারই বর্ণনা রয়েছে মহাভারতে। মহাকাব্যজুড়ে এমন বহু নারীর সন্ধান আমরা পাই। যেমন কুন্তী, দ্রৌপদী, গান্ধারী, সুভদ্রা প্রমুখ। সবার প্রতিবাদ যে সোচ্চার এমনটা নয়। নীরবে সত্যের আশ্রয়কে বুকে করে অধর্মের বিরুদ্ধাচারণ করেছেন।
(বাকিটুকু আগামী পর্বে)