ঠিক ১১ বছর আগে আজকের দিনে বাংলার বুকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটেছিল। ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটেছিল। ২০১১-র আজকের দিনে ছিল ভোট গণনা। ভারতের সমস্ত এক্সিট পোলে আভাস ছিল যে পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী। বামেরাও ধরে নিয়েছিল যে, এবার নেভার। এর আগে লোকসভা ভোট অনেকটাই আভাস দিয়েছিল। লোকসভায় ৪২ আসনের পশ্চিমবঙ্গে বামেরা মাত্র ১৫টি আসন পেয়েছিলো। কেন্দ্রে সরকার গড়েছিল কংগ্রেস, তৃণমূল ইত্যাদির জোট। রেলমন্ত্রী হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তারপর থেকে ক্রমশই বাংলায় শক্তিবৃদ্ধি করতে থাকে তৃণমূল এবং সঙ্গী কংগ্রেস। দক্ষিণবঙ্গে তৃণমূল এবং মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুরে কংগ্রেস। এর পরবর্তীতে বেশ কিছু ভোট এসেছিল। যেমন কলকাতা পুরসভা সহ বিভিন্ন পৌরসভা। একের পর এক পৌরসভা হারতে শুরু করে বামফ্রন্ট। সবশেষে এসে গেলো ২০১১-র বিধানসভার ভোট।
তৃণমূল-কংগ্রেস জোট বাংলায় ২৩১টি আসন জয় করে। ১৩ মে সকাল থেকে ভোট গণনা শুরু হয়ে কিছু অবস্থান প্রকাশের সাথে সাথে উল্লাস শুরু হয় যায় বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে। জোড়াফুল আর হাত চিহ্নের পতাকা নিয়ে সমর্থকরা পথে বেরিয়ে পড়েন।
কালীঘাটে মমতার বাড়ির সামনে বিশাল ভিড়। জনতাকে আটকাতে হিমশিম খেতে হয়েছিল সেদিন কলকাতা ও রাজ্য পুলিশকে। মমতার নির্দেশ ছিল, পুলিশ বাহিনী কোনও লাঠিচার্জ করবে না এবং সুশৃঙ্খলভাবে সবাই যাতে তাঁর বাড়িতে আসতে পারে, তার নির্দেশ ছিল। বিভিন্ন নেতারা ভোট জয় করে মিষ্টির হাড়ি নিয়ে আসতে শুরু করে "দিদির" বাড়িতে। আম জনতার মধ্যে সেই মিষ্টি বিলিয়ে দেন খোদ হবু মুখ্যমন্ত্রী। খবর আসতে শুরু করে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য-সহ ২৭ মন্ত্রী পরাজিত। ভিড় বেড়েই চলে।
আজ ১১ বছর বাদে কেমন আছে ওই জনতা? তৃতীয়বারেও জিতেছে তৃণমূল, আরও শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে তাদের। আজ বাম শূন্য, প্রাক্তন জোটসঙ্গী কংগ্রেসও শূন্য। বিরোধী আসনে আজ বিজেপি। নতুন শক্তি। পরবর্তী যত ভোট হয়েছে বিজেপিরও শক্তি হ্রাস হয়েছে। একক শক্তিতে বলবান আজ তৃণমূল। সমস্যা সেখানেই।
আজ বিরোধীহীন তৃণমূল। শক্তি যদি কমে যায়, আগামীতে তবে দায় নেবে কে? কারণ আজ লড়াই নিজেদের মধ্যেই ক্ষমতা নিয়ে। ফ্রাইডে দ্য থার্টিন!