Share this link via
Or copy link
দিনে দিনে বাড়ছে গরমের ঝাঁঝ। ইতিমধ্যে বৈশাখ মাসেই পারদ (Temperature) ঊর্ধ্বমুখী। বিগত বছরগুলির মতো এবছরেও তীব্র তাপপ্রবাহের (Heat Wave) আশঙ্কা করছে হাওয়া অফিস। আর এই গরম বাড়তেই তীব্র জলসংকটে (Water Crisis) ভুগছে ইয়াস বিধ্বস্ত সুন্দরবন (Sunderban)।
বসিরহাট মহকুমার সুন্দরবনের হাসনাবাদ, সন্দেশখালি ১ ও ২ নং সহ একাধিক ব্লকে পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। সুন্দরবনবাসীদের অভিযোগ, ইয়াস ও ইয়াস পরবর্তী ভরা কোটালের জেরে প্লাবিত হয়েছিল বিস্তীর্ণ এলাকা। সেই সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল একাধিক মিষ্টি জলের পুকুর। জলের তলায় চলে গিয়েছিল বহু পানীয় জলের কল। তারপর জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের তরফে সুন্দরবনের বেশ কিছু এলাকায় পানীয় জলের কল ও বাড়ি বাড়ি জল পরিষেবা দেওয়ার জন্য টাইম কল বসানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও কল থেকেই জলের পরিষেবা পাচ্ছেন না তাঁরা। বিশেষ করে সন্দেশখালি ১ নং ব্লকের সেহেরা-রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষ আরও বেশি সমস্যায় জর্জরিত।
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের তরফে এই পঞ্চায়েতে ১১টি পানীয় জলের কল ও আড়াই হাজার পরিবারকে বাড়ি বাড়ি জলের পরিষেবা দেওয়ার জন্য টাইম কল বসানো হয়েছিল। কিন্তু সেই কল বসানোই সার। আজও পর্যন্ত সেখান থেকে জল পাচ্ছেন না সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ, অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, পঞ্চায়েতের তরফে যে পানীয় জলের কলগুলি বসানো হয়েছিল, সেগুলি সচল থাকলেও তার সংখ্যা কম। ইয়াস পরবর্তীকালে বেশ ঘটা করে জলের এই প্রকল্প গ্রামে গ্রামে করা হলেও জল কিন্তু তাঁরা পাচ্ছেন না।
যদিও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের হাসনাবাদ উপভুক্তির অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও দেখা পাওয়া যায়নি। তবে ক্ষোভ বাড়ছে গ্রামবাসীদের। একে তো গ্রীষ্মের প্রবল দাবদাহে এমনিতেই পঞ্চায়েতের বসানো ভূগর্ভস্থ জলের স্তর কমে গিয়েছে। তার ফলে পঞ্চায়েতের বসানো কলে জল উঠছে না। তাই বাধ্য হয়েই তাঁদের কখনও পুকুর থেকে, আবার কখনও পার্শ্ববর্তী নদী থেকে জল তুলে এনে স্নান করতে হচ্ছে। যার জেরে শিশুদের মধ্যে যেমন চর্মরোগের লক্ষণ দেখা দিচ্ছে, বাদ যাচ্ছে না বড়রাও। তাদেরও ঘা সহ আন্ত্রিকের মতো রোগ লেগেই রয়েছে।
পাশাপাশি বর্ষাকালে যখন নাগাড়ে বৃষ্টি হবে, তখন চারদিকে জল জমে গেলে আরও বিপাকে পড়বেন সুন্দরবনের এই গ্রামের মানুষ। তখন জলে পচন ধরে এই রোগ আরও বাড়বে। এই সমস্যায় জেরবার পার্শ্ববর্তী ভবানীপুর ১ ও ২, ন্যাজাট ১ ও ২ এবং কালিনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও জলের কষ্টের ছবি উঠে আসছে।
সেহেরা-রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কালীকিঙ্কর দাশ বলেন, "পিএইচইকে আমরা একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু তারা বারবার বলে এসেছে নির্ধারিত জলের চাপের থেকে কম প্রেশার থাকায় এই এলাকায় জল পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের আধিকারিকদের কাছে অনুরোধ করব, অবিলম্বে যেন সুন্দরবনের এই এলাকাগুলিতে জলের পরিষেবা চালু হয়। নয়তো আগামী দিনে প্রচণ্ড সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে সুন্দরবনবাসীকে।