অগ্নিমূল্য বাজারে জিনিসপত্রের দাম। আলু (potato) থেকে মাংস, কিংবা মাছ- সবটাই ধীরে ধীরে মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরেই চলে যাচ্ছে। ক্রমাগত বাড়ছে দাম। সামনেই জামাইষষ্ঠী। এই সময় এমনিতেই কিছু জিনিসের দাম বেশি থাকে। কিন্তু এবছর তা আর মধ্যবিত্তের হাতের নাগালে নেই। অনেকেই দায়ী করছে পেট্রোল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধিকে। অনেকেই আবার মনে করছেন, বৃষ্টিতে (rain) যেহেতু প্রচুর ফসল নষ্ট হয়েছে, তাই এই দাম বৃদ্ধি। কিন্তু শুধু সবজি ও মাছ-মাংস নয়। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চালের (rice) দামও।
হুগলি (hooghly) জেলায় চিত্রটা কিছুটা এইরকম। খুচরো মার্কেটে পুরনো মিনিকিট চালের দাম ৫০ টাকা প্রতি কেজি। নতুন মিনিকিট চালের দাম ৩৮ থেকে ৪০ টাকা কেজি। স্বর্ণমাসুরি চালের দাম ২৬ থেকে ২৮ টাকা কেজি। গত বছর যে মিনিকিট চাল ৪০ টাকা প্রতি কেজি খুচরো মার্কেটে বিক্রি হচ্ছিল, সেই চাল এবছর কেজি প্রতি ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য চালের দাম প্রায়ই একই আছে।
রাজ্যে কিষাণ মাণ্ডিতে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরুর পর থেকে কিছুটা হলেও ফড়েরাজ কমেছে। তবে বর্তমানে কিষাণ মাণ্ডিতে কৃষকরা যেতে চান না একাধিক কারণে। সুকৌশলে সেই মাণ্ডি দখল করেছে ব্যবসায়ী থেকে মিল মালিকরা। ফলে চালের দাম বাড়লেও চাষিরা যে তিমিরে ছিলেন, সেই তিমিরেই আছেন। অর্থাৎ চালের দাম বাড়লে লাভবান হন মিল মালিক থেকে ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে গত আমন ধানের মরশুমে চাষের যেভাবে ক্ষতি হয়েছিল, সেই ক্ষতির বিমাই পাননি ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ চাষি। যদিও গত বছরের থেকে এবছর ৭২ টাকা বেড়ে এবছর কিষান মাণ্ডিতে ধানের সহায়ক মূল্য হয়েছে ১৯৬০ টাকা।
এই বিষয়ে চাল বিক্রেতারা জানান, চালের দাম কমার বদলে দিন দিন আরও বাড়বে। কমার কোনও আশা নেই।
প্রসঙ্গত, হুগলি জেলা আমন ধান উৎপাদনে রাজ্যে দ্বিতীয়। বর্ধমানের পরই হুগলি জেলার মূল অর্থকরী ফসলের মধ্যে ধানও অন্যতম। জেলায় আমন ধান চাষ হয় প্রায় ১ লক্ষ ৭২ হাজার হেক্টর জমিতে।
গত মরশুমে আমন চাষের শুরু থেকেই বিপত্তি শুরু হয়। জুন মাসে প্রথম পর্যায়ে বীজ নষ্ট হয় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে। তারপরও আবার নতুন করে চাষ শুরু করেন চাষিরা। গত বছর জুলাইয়ের শেষ এবং আগস্টের শুরুতে টানা বর্ষণের জেরে ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়। ধান তোলার সময়ও নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টির ফলে বেশিরভাগ জমিতে পাকা ধান মাঠেই নষ্ট হয়। বিঘা প্রতি ১৪ মন ধান ফলার জায়গায় আট থেকে দশ মনের বেশি ধান তুলতে পারেননি চাষিরা। অন্যদিকে, গত বছর বোরো ধান চাষ অনেকটাই কম হয়েছিল এই জেলায়।