'বৃহন্নলা' শব্দের অন্য একটি নাম ছিল। কিন্তু তা এখন উচ্চারিত হলে নিয়ম অনুযায়ী অশ্লীলতার দায়ে পড়তে হয় মানুষকে। এরা কারা? বিজ্ঞান বলছে, এরা পুরুষ ও মহিলার সংমিশ্রিত এক তৃতীয় মানব, নাকি মানবী। এদের চেহারার মধ্যে নারীর ছাপ থাকলেও, গঠন পুরুষদের মতো। কন্ঠস্বরও পুরুষদের মতো। চিকিৎসকদের মতে, যুগ যুগ ধরে এদের আগমন, কিন্তু এরা ভিন্ন মানসিকতার। সাধারণত জানা যায়, স্বাভাবিকভাবেই এদের জন্ম হয়। কিন্তু এরা সমাজে নাকি থাকতে পারে না স্বাভাবিকভাবে। কাজেই এরা দলবদ্ধভাবে থাকে। একজন বৃহন্নলা ঠিক আরেকজন বৃহন্নলাকে খুঁজে নেয়। এরা কোনও কাজকর্ম করে না। কারণ আজকের সমাজে কে এদের কাজ দেবে? কাজ না পেয়েও এদের হতাশা নেই। এদের রোজগার ভিক্ষা করে পেট চালানো। শোনা যায়, মুম্বইয়ের পতিতালয় নাকি এরাই চালিয়েছে দীর্ঘদিন। এরা ক্ষিপ্ত হলে ভয়ঙ্কর কাজ করতে পারে, এমন দাবিও আছে পুলিশ মহলের বিভিন্ন দফতরে। সাধারণত কারুর বাড়িতে বাচ্চা জন্মালে এরা হাজির হয় এবং বাচ্চাকে আশীর্বাদ করে মোটা টাকা দাবি করে। এই নিয়ে বহু কেলেঙ্কারি হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ জমা পড়েছে। কিন্তু এদের বিষয়ে চিরকাল উদাসীন বিভিন্ন সরকার। করবেটাই বা কী? ফলে এরা বেড়েই চলেছে।
সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যায় বাড়ছে এরা। প্রশ্ন উঠেছে, নিয়মিত বৃহন্নলাদের উৎপত্তি কোথা থেকে? করোনা আবহে এই সংখ্যা দ্বিগুণ, কোনও ক্ষেত্রে তিনগুণ বেড়েছে। তথ্য বলছে, এরা সকলেই বৃহন্নলা নয়। অভাব-অনটনে বহু পুরুষ চুল বড় করে বৃহন্নলা সেজে ভিক্ষা করছে স্রেফ পেট চালানোর দায়ে। সারা ভারতে একই অবস্থা। কয়েক বছর দেখা যাচ্ছে, ক্রসিংয়ে গাড়ি দাঁড়ালেই হামলে পড়ছে ওরা। কখনও বাসে, ট্রেনে দেখা মিলছে এদের। খুব যে একটা রোজগার হয়, এমন নয়। তবে পেট চালিয়ে নেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট।