এক অনন্য সম্প্রীতির বার্তা, এক মেলবন্ধন। মুসলিম ভাইদের দান করা জমি, আর সেই জমিতেই রাস্তা। যা সরাসরি গিয়ে মিলছে শ্মশানে। বসিরহাটের (Basirhat) দুই নম্বর ব্লকের খোলাপাতা গ্রাম পঞ্চায়েতের মথুরাপুর (Mathurapur) ও গোবিন্দপুরে (Gobindrapur) এক বিঘা জমির উপরে বৈতরণী প্রকল্পের উদ্যোগে আধুনিক শ্মশান পেল কয়েক লক্ষ মানুষ।
স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের সমস্যা ছিল, মৃত্যু হলে শবদেহের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে কখনও বসিরহাট আসতে হত, না হলে ফাঁকা মাঠে মাটিতে মৃতদেহ (deadbody) পুঁতে দিতে হত। এই শ্মশান তৈরি হওয়ায় একদিকে বিশ্রামাগার, অন্যদিকে পরিশোধিত পানীয় জল পাবেন শ্মশানযাত্রীরা। পাশাপাশি শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য নির্দিষ্ট জায়গাও হয়েছে। পাশের শ্মশানকালী, করোনাকালে দু'বছর কাজের অগ্রগতি ঘটেনি। এইবার সেই কাজ শেষের পথে। আগামী ১৩ ই জ্যৈষ্ঠ, শনিবার শুভ উদ্বোধন হবে।
স্থানীয়রা জানান, এই শ্মশানের বিশেষ তাৎপর্য হল, পাঁচ মুসলিম ভাইয়ের দান করা জমির মধ্য দিয়ে প্রায় ৪০০ মিটারের একটি কংক্রিটের রাস্তা শ্মশানের মূল প্রাঙ্গণে গেছে। মুসলিম ভাইরা যদি এই জমি না দিত, তাহলে শ্মশানের রাস্তা বের হত না। কাজ অসম্পূর্ণই থাকত। তাই একদিকে মুসলিম ভাইয়ের দান করা জমির মধ্য দিয়ে রাস্তা, তার উপর দিয়ে দেহ নিয়ে গিয়ে শ্মশানে শেষকৃত্য করবে হিন্দু পরিবারের লোকজন।
খোলাপোতা পঞ্চায়েতের প্রধান অপারেশ মুখোপাধ্যায় ও মন্দির কমিটির সদস্য প্রকাশ রায় বলেন, "এখানে দীর্ঘদিনের মানুষের সমস্যা ছিল, শ্মশানে শবদাহ না করতে পেরে অনেকে মাটিতে পুঁতে দিত। এই ব্লকে প্রায় কয়েক লক্ষ মানুষের বসবাস। তাই শ্মশানের খুবই প্রয়োজন ছিল। পাশাপাশি এখানে সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। আজকে মুসলিম ভাইরা যাওয়া-আসার পথ না দিলে শ্মশানের মূল প্রাঙ্গণে মৃতদেহ নিয়ে আসা যেত না। তাই এটা করতে পেরে আমরা শান্তি পেলাম। শ্মশানে সব সম্প্রদায়ের মানুষ এসে ভিড় জমাবেন। জাতি, বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে মিলেমিশে একাকার হয়ে যাবে, এটাই সাম্প্রতিক বাংলা।"