২৯ মার্চ, ২০২৪

Sourav: সৌরভ সক্রিয় রাজনীতির পথে? একাধিক সম্ভাবনা ঘিরে নানা মহলে জল্পনা
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-01-07 12:16:30   Share:   

প্রসূন গুপ্ত: সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এমন এক ব্যক্তিত্ব, যিনি এই সময়ে বিশ্ব দরবারে বাংলার অন্যতম মুখ। এবার এখনও তিনি তাঁর স্থানটি রাখতে পারছেন কিনা সেটাই বড় প্রশ্ন। বিভিন্ন সময়ে রবীন্দ্রনাথ থেকে সত্যজিৎ রায় হয়ে অমর্ত্য সেনের নাম বাঙালি হিসাবে তাঁদের কৃতিত্ব বিশ্ব দরবারে উঠেছে। সৌরভ তেমন না হলেও ক্রিকেট দুনিয়াতে এসে নিজেকে এবং বাঙালির গর্বের জায়গাটি ধরেছেন, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।

খেলার দুনিয়াতে ভারত অলিম্পিক বাদ দিলে একসময় নাম করেছিল হকিতে।  সেই ঐতিহ্য ১৯৮৪ থেকে ফিকে। ফুটবলে বাংলা ৯০-এর দশকের আগে ভারত সেরা থাকলেও, বিশ্বের দরবারে ভারতীয় ফুটবল নেহাতই লিলিপুট। একমাত্র ক্রিকেটে ভারত দু'বার সীমিত ওভারের খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এবং টি-২০-তে একবার। এই ভারতীয় দলে বাঙালি হিসেবে কিছুদিনের জন্য পঙ্কজ রায় সুনামের সঙ্গে খেললেও তখন ভারত বিদেশি দলের সঙ্গে খেলা মানে পরাজয় ছিল নিশ্চিত। ফলে পঙ্কজবাবু সেই অর্থে নাম করতে পারেননি। কিন্তু দীর্ঘদিন বাদে দলে এলেন সৌরভ গাঙ্গুলি, খেললেন, অধিনায়ক হলেন। বেটিং-কাণ্ডে বিদ্ধ ভাঙাচোরা একটা দলকে একসূত্রে বাঁধলেন। অজস্র রান করলেন, দলকে জেতালেন। কিন্তু বোর্ড  রাজনীতির শিকার হয়ে বাদ পড়লেন।

ফের ফিরলেন এবং এক সফল কামব্যাক করে মাথা উঁচু করে বিদায় নিলেন। বাঙালি গর্বিত হলো। এরপর সৌরভ ক্রিকেট প্রশাসনে এলেন। বাংলা ক্রিকেটের সর্বোচ্চ পদ পেলেন, তারপর ভারতীয় ক্রিকেটের সভাপতি হলেন। এর আগে বিশ্ব ক্রিকেটে ক'জনের এই সম্মান এসেছে বা পেয়েছেন? শোনা যায় সৌরভ কেন্দ্রের বা বিজেপি নেতাদের সুনজরে ছিলেন।

হয়তো এমন কথাও হয়েছিল যে তিনি রাজ্য বিজেপির মুখ হবেন কিন্তু সৌরভ সেই দিক বেশ বুদ্ধি করে এড়িয়েছেন। সবসময়ে মানুষের সেরা দিন থাকে না, এটা অন্তত সৌরভের থেকে ভালো কেউ জানেন না। কোপ পড়ে তাঁর উপর।ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসন থেকে এক প্রকার তাঁকে বিদায় দেওয়া হলো।

সৌরভ দলে থাকুন বা নাই থাক বাঙালির চোখের মণি হয়েছিলেন। বর্তমানে তাঁর অবস্থান মোটেই সুবিধাজনক নয় ক্রিকেট দুনিয়াতে। টিভি চ্যানেলে গেম শো করেন কিন্তু তিনি জানেন বাঙালির কাছে আইকন থাকতে গেলে তাঁর নাম নিয়মিত খবরে থাকতে হবে, আপাতত লাইমলাইট থেকে তিনি অনেকটাই দূরে। এবারে কি তবে তৃণমূলের হয়ে রাজনীতিতে যোগ। 

অসম্ভব কিছু নয়। খবর এমনটা না হলেও ইদানিং তাঁকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছের মানুষ হতে দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন এমনকি সম্প্রতি ফিল্ম ফেস্টিভেলেও দেখা গেল তাঁকে। ভাষণও দিলেন 'দিদি'কে ধন্যবাদ দিয়ে। দেখা গেলো এক বঙ্গীয় সাহিত্য সম্মেলেনেও। সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ বাংলায় ভাষণ দিলেন যা অনেকের মতে অভূতপূর্ব। মঞ্চে তাবড় তাবড় বক্তা,রাজ্যপাল, প্রাক্তন লোকসভার স্পিকার থেকে বিজ্ঞানী বিকাশ সিংহের মতো মুখ।

তিনি বক্তব্যে জানালেন আচার্য সত্যম রায়চৌধুরীর ডাকে এসেছেন। কাজেই তিনি বাঙালির প্রিয় জায়গাগুলিতে যাচ্ছেন তা প্রমাণিত। একইসঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও। সৌরভ খুব বুদ্ধিমান এবং আত্মসম্মানী। তাঁকে গ্রেগ চ্যাপেল যে দল থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছিলেন তা আজও ভোলেননি। ক্রিকেট বোর্ড থেকে বাদ দেওয়াটাও হজম করবেন বলে মনে হয় না। ৫ জানুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন ছিল (যদিও তিনি ওই দিনটিকে শংসাপত্রে লেখা জন্মদিন বলেন)। ওই দিন দিল্লি থেকে প্রধানমন্ত্রীর শুভেচ্ছা যেমন এসেছিল তেমনই এসেছিলো সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় থেকেও। এই প্রথম কিনা জানা নেই কিন্তু 'খবরে' এই প্রথম। তবে আগামি দিনে সৌরভ কি রাজ্যসভায়? সৌরভ পিছনের বেঞ্চে বসে থাকার পাত্র নয় অতএব আরও একটা খবরের অপেক্ষায় বাঙালি। 


Follow us on :