২৪ এপ্রিল, ২০২৪

Special: রবীন্দ্রনাথ ও কুসংস্কার
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-03-15 10:29:48   Share:   

সৌমেন সুর: ঘরে বাইরে উপন্যাসে নিখিলেশের মুখে একটি সংলাপ ছিল, 'কেবল গরুই যদি অবাধ্য হয় আর যদি মোষ অবাধ্য না হয়, তবে ওটা ধর্ম নয়, ওটা অন্ধ সংস্কার।' এই একটি কথায় রবীন্দ্রনাথের সংস্কারমুক্ত মনের পরিচয় পাওয়া যায়। ধর্মের নাম করে এধরনের পশুহত্যার ঘোর বিরোধী ছিলেন তিনি। রবীন্দ্রনাথ এক বিরল ব্যক্তিত্ব, যিনি সার্বিকভাবে সমস্ত কুসংস্কার আর অন্ধ ধর্মমতের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। তাঁর বিজ্ঞানমনস্কতা তাঁকে চালিত করেছে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে নির্মমভাবে লেখনী চালাতে। উদাহরনস্বরুপ মহাত্মা গান্ধীর মতো মানুষ যখন বিহারের ভূমিকম্পকে ঈশ্বরের অভিশাপ বা পাপের ফল হিসাবে অভিহিত করেছিলেন, তখন রবীন্দ্রনাথ শুধু তার বিরোধিতাই করেননি, এই ধরনের মন্তব্য যে বহু মানুষকে বিভ্রান্ত করবে, তাও স্পষ্টভাবে বলতে দ্বিধা করেননি।

বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংস একটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী মন্তব্য করেছেন, সৃষ্টি শুরু করা বা ব্রহ্মান্ডকে টিকিয়ে রাখার জন্য তথাকথিত ঈশ্বরের কোনও ভূমিকা নেই।রবীন্দ্রনাথ অনেক আগে বুঝেছিলেন,নাস্তিকতা কুসংস্কার বিরোধী মানসিকতার চরম রুপ। তাই ৭৮ বছর বয়সে লেখা রবিবার ছোট গল্পের নায়ক অভীক একজন ঘোর নাস্তিক। রবীন্দ্রনাথ অভীকের মুখ দিয়ে বলিয়েছেন যে, দেশে দিনরাত্রি ধর্ম নিয়ে খুনেোখুনি, সেদেশে সব ধর্মকে মেলাবার পূন্যব্রত আমার মতো নাস্তিকেরই।

শুধু ধর্ম নয়, বিজ্ঞানের মধ্যেও যে গোঁড়ামি লুকিয়ে আছে তা আসলে অবিজ্ঞান- এ বোধ রবীন্দ্রনাথেরই। 

রবীন্দ্রনাথের ক্ষুধিত পাষান,কঙ্কাল, নিশীথে এইসব বিখ্যাত ছোটগল্পগুলিকে অনেক সমালোচক নিছক ভূতের গল্প বলে মন্তব্য করেন। কিন্তু একটু মনোযোগ দিয়ে গল্পগুলো পড়লে বোঝা যায়,বর্ণনাকারীর মানসিক বিভ্রমই রচনা করেছে গল্পের শরীর।



Follow us on :