দুর্গাপুরের রাস্তায় মহিলা বাইক রাইডার (bike rider) টুম্পা ঘোষ রীতিমতো দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। সংসার চালাতে মেয়েবেলার প্যাশনকে আজ প্রফেশন করে নিয়ে জীবনযুদ্ধের এক লড়াইয়ে অবতীর্ণ টুম্পা।
একটা সময় বাইক (bike) চালানোটা ছিল তাঁর কাছে প্যাশন। আজ সংসার চালাতে সেই প্যাশন বদলে গেছে পেশাতে। দুর্গাপুরের (durgapur) টুম্পা ঘোষ আজ একজন বাইক রাইডার। দুটি বেসরকারি সংস্থার হয়ে আজ টুম্পা বাইকে করে সময়মতো আরোহীকে তাঁর নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছেন। ঘরে অসুস্থ বাবা-মা ছাড়া একজন প্রতিবন্ধী বোন রয়েছেন। আরও দুই দিদির বিয়ে হয়ে গেলেও, সংসার ও বোনের চিকিৎসার খরচ জোগাতে বাইকের হ্যান্ডেল ধরেছেন বছর তিরিশের টুম্পা।
২০১০ সালে দুর্গাপুরের মহিলা সরকারি মহাবিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর শহরের বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার ব্যাক অফিসে কাজ করছিলেন টুম্পা। কিন্তু মাথা তুলে একেবারে নিজের মতো করে বাঁচতে চেয়েছিলেন টুম্পা। তাই চাকরি ছেড়ে বাবার বাইকের হ্যান্ডেল ধরেছিলেন তিনি।
ভোর থেকে রাত পর্যন্ত বাইকে করেই আরোহীকে সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়াটা আজ টুম্পার বড় দায়িত্ব। নিজের প্যাশনকে সংসার বাঁচানোর তাগিদে প্রফেশন হিসেবে বেছে নিয়েছেন তিনি। বাধাবিপত্তিও এসেছে এই কাজে। পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজ খুব একটা ভালোভাবে মেনে নেয়নি টুম্পার এই কাজকে। তবুও মাথা উঁচু করে টুম্পা তাঁর নিজের লক্ষ্যে অবিচল। হাজারো কষ্ট আছে, আছে যন্ত্রণা, তবুও ভোর থেকে রাত পর্যন্ত যেখানেই কল পাচ্ছেন, সেখানেই আরোহীকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছেন। আর তাঁর এই মাথা তুলে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে সহযোদ্ধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন তাঁর পুরুষ সহকর্মীরা।
দুর্গাপুরের বাইক রাইডার টুম্পা ঘোষ যেন হাজারো লড়াইয়ের সাক্ষী হয়ে দিশা দেখাচ্ছেন এই সমাজকে।