২০ এপ্রিল, ২০২৪

Vote: পঞ্চায়েত ভোট লোকসভার সেমিফাইনাল, শাসক-বিরোধী কে কোথায় দাঁড়িয়ে
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2023-01-08 12:32:28   Share:   

প্রধান সম্পাদক, ক্যালকাটা নিউজ: ২০২৩-এ ভারতের রাজনৌতিক অবস্থানে ৯টি রাজ্যে ভোট। পশ্চিমবঙ্গে অবশ্য বিধানসভার ভোট বলতে মানিকতলা কেন্দ্র এবং মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে উপনির্বাচন। কিন্তু এ বছরে আবার পঞ্চায়েত ভোট। আমি মনে করি এই গ্রামবাংলার ভোটের ফলের উপর অনেকটাই লোকসভা ভোট দাঁড়িয়ে আছে। বলা যেতে পারে লোকসভা ভোটের সেমিফাইনাল। কাজেই তৃণমূল-সহ বাকি রাজনৈতিক দলগুলির কাছে যথেষ্ট মাথাব্যথার কারণ হতে পারে এই পঞ্চায়েত ভোট। আমরা জানি, পশ্চিমবঙ্গে গ্রাম যাঁর রাজ্য তাঁর।

ভারত কৃষি প্রধান দেশ, বাংলাও তার বাইরে নয়। উপরে দার্জিলিং জেলা থেকে দক্ষিণের সুন্দরবন অবধি অধিকাংশই গ্রাম। ভারতের বেশির ভাগ রাজ্যই গ্রাম ও শহর, দুই এলাকার উন্নয়নের দিকে জোর দেওয়া হয়ে থাকে। রাজ্য দখলের ক্ষেত্রে কিন্তু বাংলা দাঁড়িয়ে গ্রামের ভোটের দিকে তাকিয়ে। বাম জমানায় কলকাতা হাওড়া সহ বিভিন্ন জায়গায় তৎকালীন কংগ্রেস এবং পরে তৃণমূল ভালো ফলে করলেও শেষ পর্যন্ত গ্রামের সমর্থনে বামফ্রন্ট ৩৪ বছর রাজ করেছে এ রাজ্যে।

প্রশ্ন হচ্ছে তবে কী ধরে নিতে হবে বাইরে দুর্দান্ত কাজ করেছিল বাংলার গ্রামে গ্রামে? তা একেবারেই অর্ধসত্য। তবে প্রশ্ন উঠতেই পারে কী জাদুতে বামেরা দীর্ঘদিন গ্রাম নিজেদের দখলে রেখেছিলো। বামেরা ক্ষমতায় এসে পঞ্চায়েতি রাজ ঘোষণা করেছিল। বলেছিলো জমি তার, হাল চালায় যে। বাস্তবে একটা সময়ে ভূমিহীন কৃষকের হাতে জমির পাট্টা এসেছিলো আবার পরবর্তীতে তাই সমস্যা হয়েছিল।

কিন্তু ফরেরাজের দৌলতে চাষিরা হাতে যা টাকা পেত তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন ছিল। কিন্তু এ নিয়ে প্রতিবাদ ছিল কম। আসলে পঞ্চায়েতরাজের নামে পার্টিরাজ চলতো। এখানে পার্টিই শেষ কথা কাজেই ওই ফর্মুলা একটা সময়ে ভেঙে গেলো, নন্দীগ্রাম , সিঙ্গুর, নেতাই,জঙ্গলমহল ইত্যাদি ঘটনায়। এর ফসল তুলে নিলো বার্মানে সরকারে থাকা তৃণমূল।

বর্তমানে পঞ্চায়েতের মূল লড়াই তৃণমূল বনাম বিজেপি। নিঃসন্দেহে বলবো শহর থেকে গ্রামে রাস্তাঘাট জলের ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতি হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে। কিন্তু একইসঙ্গে দুর্নীতিও কম হয়নি। এটা বিরোধীদের এই মুহূর্তে বড় অভিযোগ।  আজ বহু নেতা কোটি কোটি টাকার মালিক এবং ভোটাররা এই সম্পত্তি জনিত কারণে নেতাদের উপর বিরক্ত।

তবুও আজকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে ভোট হয়। কাজেই বিজেপিকে কিন্তু জনতার মধ্যে মিশে যেতে হবে, তাদের সমস্যা বুঝতে হয়। কিন্তু তার লক্ষণ এখনও সাংগঠনিক ভাবে পাওয়া যায় নি। হাজার হাজার বুথস্তরে কর্মী নেই প্রার্থী হবে কোথা থেকে? এই প্রশ্ন বিরোধী বিজেপির হয়ে তুলছে খোদ শাসক দলের একটা অংশ। অন্যদিকে বামেদের অবস্থানও ক্ষয়িষ্ণু। এবারে একটি বার্তা পরিষ্কার যে, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো এবারও যদি জুলুম চলে তৃণমূল আশ্রিত গুন্ডা বাহিনীর তবে কিন্তু আলাদা করে বিজেপিকে সংগঠন করতে হবে, না ভোটাররা এমনিতেই পাল্টে যাবে? কাজেই সুশৃঙ্খল ভাবে ভোট হলে লোকসভার আগে পশ্চিমবঙ্গের আসল চিত্রটি ধরা যাবে। (অনুলিখন: প্রসূন গুপ্ত)


Follow us on :