সৌমেন সুর: 'বাঙালির আতিথেয়তা ও আপন করে কাছে টেনে নেওয়ার দুর্বার ক্ষমতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। পাশাপাশি ভারতের কৃষ্টি, ঐতিহ্য, ব্যবহার ভীষণভাবে আকর্ষণ করে।' অত্যন্ত সাবলীলভাবে ভীষণ আনন্দে কথাটা বলেন ডক্টর লীনা মারিয়া ফ্রুজিতা। ডক্টর ফ্রুজিতা আদতে ইথিওপিয়ার মেয়ে। বাবা ইটালিয়ান, পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। মাত্র তিন বছর বয়সে লীনা বাবা-মায়ের সঙ্গে সুদান চলে আসেন। যখন লীনার বয়স ১৮ বছর, তখন তিনি বাবাকে হারান। সেই দুর্দিনে লীনার মায়ের একটা ধ্যানজ্ঞান ছিল কীভাবে ছেলেমেয়েকে মানুষ করা যায়। ধীরে ধীরে টিপসই জানা মহিলার (লীনার মা) ব্যবসায় প্রবেশ। বুদ্ধিমতী এই মহিলা ধীরে ধীরে ব্যবসাকে নিজের পায়ে দাঁড় করান।
এদিকে, সুদানে স্কুলের পড়া শেষ করতেই লীনাকে পাঠানো হয় আমেরিকায়। সেখানে তিনি ঠিকমতো নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেন না। কিন্তু মানিয়ে নিতে বাধ্য হন ফ্রুজিতা। আমেরিকার কলেজ থেকে বিএ পাশ করে, বাংলা ভাষা মন দিয়ে শিখে নেন লীনা। এরপর অ্যানথ্রোপলজিতে এমএ পাশ করে মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইডি করেন। গবেষণার বিষয় ছিল: বাংলার মেয়েদের আচার, আচরণ ও অনুষ্ঠান।
গবেষণাপত্রের বিষয় স্থির করার পর থেকেই লীনা দেবী ভারতীয় ভাবধারাকে নিজের মনের মধ্যে আত্মস্থ করার চেষ্টা করেন। গবেষণার জন্য তাঁকে ফিল্ড ওয়ার্কে নামতে হয়। এই কাজের জন্য তাঁকে প্রথম ভারতে আসতে হয় ১৯৬৭ সালে। দু'বছর কাজ করার পর ১৯৭১ সালে আবার ভারতে আসেন। (চলবে)