২৮ মার্চ, ২০২৪

Bengali: বাংলা সাহিত্যে নারী চরিত্রের অবস্থান এবং ভূমিকা (প্রথম পর্ব)
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2022-11-27 10:01:37   Share:   

সৌমেন সুর: 'নারীকে আপন ভাগ্য জয় করিবার/কেহ নাহি দিবে অধিকার/হে বিধাতা?' শুধু কাব্য বা কবিতায় নয়, রবীন্দ্রনাথের একাধিক ছোটগল্প ও উপন্যাসে নারীর স্থান হয়েছে উচ্চ আসনে। ধ্বনিত হয়েছে নারীশক্তির জয়গান। তাঁর রচনা শেষের কবিতা, গোরা, পয়লা নম্বর, স্ত্রীর পত্র ইত্যাদি বিষয়ে নারীদের মধ্যে একটা স্নিগ্ধ বুদ্ধিদীপ্ত আচরণ লক্ষ্য করা যায়। তাঁরা পুরুষের করুণার সামগ্রী নয়, তাঁরা স্বাধীনচেতা মানুষ। প্রয়োজনে তাঁরা পুরুষকে প্রত্যাখানও করতে পারে। যেমন স্ত্রীর পত্রে অসাধারণ চরিত্র মৃণাল বলিষ্ঠভাবে উক্তি করেছে 'ওরে মেজ বৌ ভয় নেই তোর। তোর মেজ বৌয়ের খোলস ছিন্ন হতে এক নিমেষও লাগে না। তোমাদের গালিকে আর আমি ভয় পাইনে। আমার সম্মুখে নীল সমুদ্র, মাথার উপর আষাঢ়ের মেঘপুঞ্জ। আমি বাঁচবো...আমি বাঁচলুম।'

শরৎচন্দ্রের উপন্যাসে নারী চরিত্রের মধ্যে দেখতে পাই অন্য রূপ। এক অদ্ভুত আবেগময় উপস্থিতি। রমা, সাবিত্রী, রাজলক্ষ্মী, কমললতা এসব চরিত্র আপন শুচিতায় ভাস্বর। এঁরা অতৃপ্ত হৃদয়বাসনাকে বহন করে দগ্ধ ধূপের মতো নিজেকে নিঃশেষে বিলিয়ে দেয়। আবার অভয়া, অচলা, কমললতার চরিত্রের মধ্যে বিদ্রোহিণী রূপ ফুটে ওঠে। প্রয়োজনে পুরুষের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। 'শ্রীকান্ত' উপন্যাসে অভয়া রোহিণীর ভালবাসার মর্যাদা দিতে তাঁর সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর মতো বসবাস করেন। স্বামী নামক আদর্শের পিছনে সে আর ধাওয়া করে না। শ্রীকান্তকে উপলক্ষ্য করে সে সমাজের কাছে প্রশ্ন করে-'আমাকে যিনি বিয়ে করেছিলেন, তাঁর কাছে না এসে উপায় ছিল না। আবার এসেও উপায় হল না। তাঁর স্ত্রী ছেলেপুলে, তাঁর ভালবাসা কিছুই আমার নিজের নয়, তবু তাঁরই কাছে তাঁর গণিকার মতো পড়ে থাকা থাকাতেই কী আমার জীবন ফলে ফুলে ভরে উঠে স্বার্থক হতো শ্রীকান্তবাবু?' (চলবে) 

তথ্যঋণ: পূর্বাশা মণ্ডল


Follow us on :