Share this link via
Or copy link
প্রসূন গুপ্ত: শাম্মি কাপুরের জেদে রাহুল দেব বর্মনের কোরিয়ার শেষ হতে পারতো। বিখ্যাত বাবার ছেলে হওয়া যেমন সুবিধার তেমন অসুবিধারও বটে। অনেকেই ছেলের মধ্যে বাবার প্রতিভা খুঁজতে চায়। হয় না বেশিরভাগ সময়ে। রাহুল দেব বর্মনের জীবনেও এমন ঘটনা ঘটেছে। শচীন কর্তার পুত্র হিসাবে বাবার বহু ছবির সহকারীর কাজ করে হাত পাকিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর সুযোগ আসছিলো না সুরকার হিসাবে। প্রথমে মেহমুদের প্রোডাকশনের দুটি ছবিতে সুর দেন রাহুল। দুটি ছবিই ফ্লপ করে কিন্তু গানগুলি নেহাত খারাপ ছিল না। রাহুল মোটামুটি দেব আনন্দদের গ্রুপে ছিলেন।
দেব এবং ভাই বিজয়ের প্রিয়পাত্র ছিলেন তিনি। হঠাৎ একবার প্রযোজক নাসের হুসেন, বিজয় বা গোল্ডির কাছে আসেন, তাঁর পরবর্তী ছবি তিসরি মঞ্জিল ছবি পরিচালনা করতে। গোল্ডি সাধারণত নিজেদের প্রোডাকশন হাউস নভকেতন ছাড়া পরিচালনা করতে চাইতেন না। কিন্তু নাসিরের মতো ব্যক্তিত্ব অনুরোধ করায় না করতে পারেননি।
ছবির চিত্রনাট্য শেষ, এবার অভিনেতা-অভিনেত্রী খোঁজার পালা। নাসির তাঁর প্রিয়পাত্রী আশা পারেখের কথা জানালেন গোল্ডিকে। প্রথমে না করেও রাজি হয়ে যান বিজয় বা গোল্ডি। এরপর নায়ক, স্বাভাবিকভাবেই গোয়েন্দা গল্প কাজেই দেব আনন্দকেই চাই দুজনেরই। কিন্তু কোনও এক অজানা কারণে দেব রাজি হয়েও ছবি থেকে বেরিয়ে যান। এরপর শাম্মি কাপুরকে নেওয়া হয় নায়ক হিসাবে। বিজয়ের একটাই অনুরোধ ছিল শচীন দেব বর্মনকে সুরকার হিসাবে নিতে হবে।রাজি হয়ে যান নাসের কিন্তু এখানেও সমস্যা হয়। শচীনকর্তা সময় দিতে পারেন না। তখন বিজয়ের দ্বিতীয় পছন্দের রাহুলকে নেওয়ার কথা বলেন। নাসির বলেন একটু শাম্মির সাথে কথা বলতে হবে।
শাম্মি শুনেই বাতিল করে দেন রাহুলকে। তাঁর পছন্দ শংকর জয়কিশান অথবা ওপি নাইয়ার। কিন্তু গোল্ডি বলেন এরকম করলে তিনি পরিচালনা করবেন না। অন্যদিকে রাহুলের একটা সুযোগের দরকার ছিল। রাহুল ভাবলেন প্রায় ৮ বছর এই লাইনে থেকে শেষ পর্যন্ত বিদায় নিতে হবে নাকি? শেষ পর্যন্ত শাম্মি রাজি হন কিন্তু শর্ত থাকে প্রতিটি গান তাঁকে শোনাতে হবে। গান শুনে বেজায় খুশি শাম্মি কাপুর। এই তিসরি মঞ্জিলের গান আজকেও সমানভাবে বাজারে চালু। ভালোবাসার মানুষকে মনের কথা শোনাতে অনেকেই গেয়ে ওঠেন, 'ও হাসিনা জুলফোবালি জানে জাহান...'