Share this link via
Or copy link
সৌমেন সুর: অনেক নদীপথ পার হয়ে অবশেষে বেলায় ভাসতে ভাসতে লখিন্দরকে নিয়ে বেহুলা পৌছলেন বর্ধমানের নারকেলডাঙায়। এখানে তাঁর চোখে পড়ে একটা মন্দির। মন্দিরটি মা মনসার। মায়ের কাছে স্বামীর প্রাণ ভিক্ষা চাইলেন। মন্দিরের মা হলেন দেবী জগৎগৌরী। পুরানে আছে জগৎগৌরীই মা মনসা। দেবী জগৎগৌরি কিভাবে এখানে আবির্ভূত হলেন, সে ব্যাপারে একটা গল্প আছে। প্রথম পর্বের পর...
দেবী জগৎগৌরীর মাহাত্ম্য লোকের মুখে মুখে। নানা গ্রামের লোক দেবীর জন্য মন্দির গড়েছে। যেমন বৈচি বৈদ্যপুর তেহাটা, রামনগর, পলতাপাড়া, আটকোটিয়া, হাসনহাটিতে গ্রামবেড়ানি করেন দেবী জগৎগৌরী। দেবী মায়ের ঝাঁপান উৎসব হয় আষাঢ় মাসের পঞ্চমীতে। মাকে মন্দির থেকে ঝাঁপানতলায় নিয়ে আসা হয়। চতুর্দোলায় চড়িয়ে মাকে নাচতে নাচতে নিয়ে আসা হয়। ঝাঁপানের আগের দিন দেবীকে পরানো হয় রাজবেশ। চলে অধিবাস। সারাদিন চণ্ডীপাঠ, পুজো চলে, বলি হয়। গ্রামের মেয়েরা ফলাহার করেন।
নারকেলডাঙার ঝাঁপান উৎসব বর্ধমানের সেরা উৎসব বলে বিবেচিত। মাল সম্প্রদায়ের বেদেরা সাপ খেলার সঙ্গে মা মনসার গান গায়। আষাঢ় মাসের বৃষ্টি কাদা মেখে সাঁওতালরা আসে ধামসা বাজিয়ে। চতুর্দোলার সঙ্গে নাচতে নাচতে যায় বামুন, বাউরি, তিলি, সদগোপ, কায়স্থ, কোঁড়া। মা জগৎগৌরীর কাছে সবাই সমান। সবাই মায়ের সন্তান। দেবী জগৎগৌরীর স্বপ্নে, নন্দীদের মেজ পরিবার নারকেলডাঙায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন দেবীকে। সেই থেকে দেবী জগৎগৌরীর বাপের বাড়ি নন্দীপারেই। প্রতি বছর গ্রামবেড়ানিতে বৈদ্যপুরের এ বাড়িতে তিনদিন কাটান এখানে। মা জগৎগৌরীর মহিমা বর্ধমানের সেরা মহিমা, একথা নিঃসন্দেহে বলা যায়।