Share this link via
Or copy link
সৌমেন সুরঃ সংস্কৃতি হল জাতির সামগ্রিক পরিচয়পত্র। যুগ-যুগান্তর ধরে জাতির বিশিষ্ট হওয়ার যে স্বপ্ন-সাধ, যে আধ্যাত্ম আকুতি, নৃত্যে, শিল্পে, সাহিত্যে, সঙ্গীতে, ভাস্কর্যে, স্থাপত্যে, আচার,অনুষ্ঠানে দার্শনিক ভাবনায়, যে সকল গৌরবময় প্রকাশ, তাই তার সংস্কৃতি। সংস্কৃতি জাতির সর্বাঙ্গীণ উন্নতির চরমতম পরিণাম ফল। সত্য, শিব-সুন্দরের আবাহনের মধ্যেই সংস্কৃতির অভিব্যক্তি।
একসময় গ্রাম ছিল বাঙালি সংস্কৃতির প্রাণভূমি। প্রকৃতির প্রসন্নতা ও মহিমা বাংলার সংস্কৃতিকে বিশিষ্ট মর্যাদায় ভূষিত করেছে। দিয়েছে স্বতন্ত্র মানসিকতা। তারপর একদিন তার সংস্কৃতি হল শহরমুখী। এদিকে বাঙালি কাউকে দূরে সরিয়ে দেয়নি। সকলকেই সে নিজে করে গ্রহণ করেছে। দিয়েছে স্বতন্ত্র মর্যাদার সম্মান।
কোনও এক প্রাগৈতিহাসিক কালে অস্ট্রিক গোষ্ঠীর মানুষ এই সংস্কৃতির প্রথম ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেছিল। তারপর দ্রাবিড় ভোট ব্রহ্মের সংস্কৃতির ঢেউ এসে আছড়ে পড়লো সেই প্রস্থরে। এলো আর্য জাত। মিশ্রণ ঘটলো বিভিন্ন ভাষাভাষীর।
কালক্রমে সকলেই নিজের জাতিত্ব ও সত্ত্বা ভুলে গেলো। সকলে এক নতুন এক সৃষ্ট জাতিতে বিলীন হয়ে গেলো। খ্রিস্টিয় অষ্টম শতাব্দী থেকে বাঙালি সংস্কৃতির সম্ভাব্য সূচনাকাল। এই সময় থেকে শুরু অনার্য সংস্কৃতির রূপান্তর। ব্রাহ্মণ, জৈন, বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব পড়লো। আবির্ভাব ঘটলো ইসলাম সংস্কৃতির। সুফি সম্প্রদায়ের প্রভাবে বাংলার লোক সংস্কৃতি হল পুষ্ট। আজ বাঙালি সংস্কৃতি হিন্দু-মুসলমানের যৌথ সম্পদ। এলো ইংরেজ, বাংলা সংস্কৃতির প্রবাহে উঠলো নতুন ঢেউ।