২৫ এপ্রিল, ২০২৪

Martyr: বাংলা ভাষা আন্দোলনের প্রথম নারী শহিদ কমলা ভট্টাচার্য (দ্বিতীয় পর্ব)
CN Webdesk      শেষ আপডেট: 2022-11-18 21:38:25   Share:   

সৌমেন সুর: ১৯৬১ সালের ১৯ মে বাংলা ভাষার অমর্যাদা সহ্য করতে না পেরে শিলচর শহরে যারা প্রতিবাদ মুখর হয়ে দাঁড়িয়ে শহিদের মৃত্যুবরণ করে ছিলেন, সেই ১১টি তাজা প্রাণের কথা আমরা ভুলে গিয়েছি। কী এক অজ্ঞাত কারণে ভারতবর্ষে বাংলা ভাষার অধিকার রক্ষার আন্দোলনের প্রথম শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমাদের কেন এত অনীহা! 

দেশভাগের শিকার হয়ে কমলার পরিবার চলে আসে শিলচর। অভাবের সংসারে, খুব কষ্ট করে সংসার চলতে থাকে। একমাত্র সেজদি প্রতিভা দেবী একটি স্কুলের শিক্ষিকা। সংসার একমাত্র তাঁর আয়ের উপর দাঁড়িয়ে। কমলার দাদারা, সেভাবে কেউ কিছু করে না। বাবা রামরমন ভট্টাচার্য অনেক আগেই মারা যান। কমলার মা সুপ্রভাসিনী দেবী অক্লান্ত পরিশ্রম করেন সংসারের জন্য। এদিকে কমলার স্বপ্ন সে গ্র্যাজুয়েট হতে চায়। সেজদি বোনের এই আকাঙ্ক্ষা জেনে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেন, সংসারকে ধরে রাখতে সে যেন কখনও হেরে না যায়। 

কমলার ম্যাট্রিক পরীক্ষার শেষ দিনে ওদের বাড়িতে ২০-২২ জন মেয়ে আসে। তাঁরা কমলাকে নিয়ে যেতে চায় ভাষা আন্দোলনের শরিক হওয়ার জন্য। বাড়িতে ঘোরতর আপত্তি, কিন্তু মেয়েরা বোঝায়, 'কিচ্ছু হবে না মাসিমা। কমলাকে ঠিক সময়ে আমরা বাড়ি পৌঁছে দেব। স্টেশনে একটা পিকেটিং আছে আর আমরা রেল অবরোধ করবো। বিকেল ৩টে লাস্ট ট্রেন। ওটা আটকাতে পারলে সব স্তব্ধ।'

ইতিমধ্যে কমলা তৈরি হয়ে কাছে আসেন। আজ ওর সঙ্গী হয়েছেন ওর ছোট বোন মঙ্গলা। বাড়ির সবাই এক অজানা আতঙ্কে কমলাকে বিদায় জানায়। যথারীতি শান্তিভাবে পিকেটিং আন্দোলন কমপ্লিট হয়। হলে কী হবে! হলে কী হবে অনেক আগেই গোটা এলাকা অসম রাইফেলস ঘিরে রাখে। শুরু হয় লাঠিচার্জ-গুলি বর্ষণ। ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় দল। যে যেদিকে পারে পালাতে থাকে। কমলা উদ্ভ্রান্ত হয়ে মঙ্গলাকে খুঁজতে মরিয়া। অনেকে আহত হয়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে। এমন সময় কমলার মাথায় একটা গুলি এসে লাগে। (চলবে)  তথ্যঋণ: আশিস গঙ্গোপাধ্যায়


Follow us on :